রায়গঞ্জসিরাজগঞ্জ

রায়গঞ্জের ইছামতি নদী নতুন প্রজন্মের কাছে শুধুই স্মৃতি

সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ৮ নং পাঙ্গাসী ইউনিয়নের কালিঞ্জা ব্রিজ থেকে হাটপাঙ্গাসী ব্রিজ হয়ে গারদহ ব্রিজ দিয়ে প্রবাহিত ইছামতি নদীর নব্যতা হারিয়ে এখন মরা খাল বলা চলে। চৈত্র মাস না আসতেই নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। মাছের বদলে চাষ করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ফসল।

জানা যায়, ইছামতি নদীটি বগুড়া জেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নে প্রবহমান বাঙ্গালী নদী হতে উৎপত্তি লাভ করেছে। অতঃপর এই নদীটির জলধারা সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার নলকা ও পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে বাঙ্গালি নদীতেই নিপতিত হয়েছে।এলাকাবাসি জানান, বর্তমানে যৌবন হারানো নদীর বুক জুড়ে বোরো ধানে চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত বর্ষা মৌসুমে এক থেকে দু’মাস নদীতে পানি থাকে। আবার নদীটি তার আপন সত্তা হারিয়ে আগাম শুকিয়ে যাওয়া নদীর বুকে চলে কৃষকের বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ।

বলা চলে এখন নদীর বুকে চাষাবাদ হচ্ছে ধান, ভুট্টা, রসুন, পেয়াজসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল। গতকাল ১৩ ফেফ্রুয়ারি,সোমবার উপজেলার হাটপাঙ্গাসী ইছামতি নদী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইছামতি নদীর অনেকাংশ শুকিয়ে যাওয়ায় চাষ করা হচ্ছে বোরো ধান সহ বিভিন্ন ধরনের ফসল।

এদিকে নদীর দু’পাড়ের অধিকাংশ বাসিন্দারা বলেন, হাটপাঙ্গাসী ইছামতি নদী এখন ফসলি জমিতে পরিণত হয়েছে। কোথাও ধূ-ধূ বালুরচর, কোথাও হাঁটু জল, কোথাও জলবিহীন গর্ত। কালের আবর্তে হাটপাঙ্গাসী এলাকার ইছামতি নদীর সুনাম ও জৌলুস আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে। এক সময় এই নদীতে পাওয়া যেতো বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর মাছ। বিশেষ করে ভাদ্র-আশ্বিন ও কার্তিক মাসে নদীতে দেখা যেতো হরেক রকমের মাছ। মনের আনন্দে মাছ ধরত জেলে পরিবারগুলো। নদীর দু’ পারে শ্যালোমেশিন বসিয়ে কৃষকরা আবাদ করতেন বিভিন্ন ধরনের ফসল। ইছামতি নদীকে ঘিরে জমে উঠে ছিল এক একটি নৌঘাট, ব্যবসা কেন্দ্র ও বিভিন্ন বাজার। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বণিকরা হরেক রকমের নৌকা নিয়ে কৃষিপণ্য ক্রয় করার জন্য ভদ্রঘাট নৌকা ঘাট ও পাঙ্গাসী ঘাট সহ বিভিন্ন নৌকার ঘাট ও বাজারের পাশে এসে জমায়েত হতো। এলাকায় উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিপণ্যের মধ্যে এক সময়কার আঁখের গুড়, ধান, চাল, গম, জব, পাটসহ অন্যান্য সামগ্রী ক্রয় করে নৌকায় বোঝায় দিয়ে নিয়ে যেতেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। বর্তমানে নদীর দু’ পাশে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর। ইছামতি নদীর এ সব দৃশ্য এখন শুধুই স্মৃতি। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button