উল্লাপাড়াসিরাজগঞ্জ

উধুনিয়ায় ভাসমান কফি হাউস

উল্লাপাড়া থেকে ফিরে আনিছুর রহমান : উল্লাপাড়ার প্রত্যন্ত একটি এলাকার নাম পাঙ্গাসী,উধুনিয়া। বড় পাঙ্গাসীর বাংলাপাড়া হতে উধুনিয়া যেতে পাড়ি দিতে হত ধু ধু করা বিলের প্রায় ৩ কিলোমিটার মেঠোপথ। শুকনো মৌসুমে গরু,মহিষের গাড়ি আর বর্ষায় নৌকাই ছিল যাদের যাতায়াত ও মালামাল বহনের একমাত্র বাহন। স্থানীয় এমপি তানভীর ইমামের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আধুনিকতার ছোয়ায় দীর্ঘদিনের অবহেলিত কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরন হয়েছে। আঁকাবাঁকা নান্দনিক পাকা সড়কটি পেয়ে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ দুর হয়েছে। এখন এলাকার মানুষের জীবনে লেগেছে পরিবর্তের ছোয়া। তেমনি পাঙ্গাসীর বাংলাপাড়া-উধুনিয়া বিলটি বর্তমানে ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে মৌসুমী পর্যটন এলাকা হিসেবে স্থান পেয়েছে। মানব জীবনের ক্লান্তি, অলস সময় বা নাগরিক ব্যস্ততায় অনেকেই হাঁপিয়ে পড়েন। তাই তো একটু প্রশান্তির ছোয়া পেতে ছুটছেন অনেকেই উধুনিয়া বিলের পাড়ে। শুধু উল্লাপাড়াই নয়, দুর দুরান্ত এলাকার ভ্রমণ পিপাসুরা আসছেন এই বিল পাড়ে।উল্লাপাড়ার শ্যামলীপাড়া হতে পশ্চিমে প্রায় ১৬ কি:মি: বাংলাপাড়া-উধুনিয়া বিল। বিলে শুধুই বর্ষার পানি।শ্রাবণে উধুনিয়া বিলে প্রকৃতির যৌবনে এসেছে সজীবতা।

পানির মাঝখান দিয়ে সুসজ্জিত,নয়নাভিরাম আঁকাবাঁকা পাকা সড়কের দু’ধারে ফুসকা,বাদাম, চটপটি,শিশুদের খেলনা, চাস্টল সহ ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য রয়েছে হরেক রকম ভ্রাম্যমান দোকান। সুষ্ঠু বিনোদেেনর জন্য আরও রয়েছে আকর্ষণীয় ভাসমান জলডাঙ্গা কফি হাউস, ভাইভ স্টার কফি হাউসসহ আরেকটি। স্বচ্ছ জলরাশির প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করছেন আগন্তকরা। পড়ন্ত বিকেলের হিমশীতল বাতাসের ছোয়ায় আনন্দে শিহরিত তারা। অনেকেই বিলপাড় আর কফি হাউসে গিয়ে নিজের মোবাইল বা ক্যামেরায় ছবি তুলে স্মৃতি ধরে রাখছেন। আবার কেউ কেউ বোট নৌকা বা স্পীড বোটে উঠে পরিবার নিয়ে মজা করে পানির উপর ঘুরছেন।এভাবেই পর্যটকরা এসে উধুনিয়া বিল পাড়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। ভ্রমণ পিপাসুরা জানান,উধুনিয়া বিল খ্যাত মিনি কক্সবাজার উপভোগ করতে পেরে খুবই আনন্দ লাগছে।

কথা হয়, জলডাঙ্গা কফি হাউসের পরিচালক মন্ডলীর প্রধান সামাজিক ব্যক্তিত্ব, একজন তরুণ উদ্যোক্তা বকুল হোসেনের সাথে। চাকরি জীবনের পাশাপাশি সমাজ সেবা ও জনকল্যাণ মুলক কাজকে তিনি বেশি প্রাধান্য দিতেন। নিজ এলাকা বাংলাপাড়া-উধুনিয়া বিলে বেড়াতে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের ভ্রমণ সার্থক ও আভিজাত্য করতে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি। প্রায় ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৫ শতক জমির উপর নির্মান করেন “জলডাঙ্গা” কফি হাউস নামে ভাসমান রেস্টুরেন্ট। পাকা সড়ক থেকে নেমেই ঝুলন্ত সেতুর উপর দিয়ে পার হয়ে সিঁড়ি বেয়ে নামতে হয় পানির উপর ভাসতে থাকা এ কফি হাউসে। প্রায় ৫ শত প্লাস্টিকের ড্রামের উপর কাঠ বিছানো আর পুরানো ঐতিহ্য ছোট ছোট ছোনের টুঙ্গি গোল ঘরে বসতে যেন সত্যিই মন জুড়াবে। থৈ থৈ স্বচ্ছ পানিতে ভাসমান কফি হাউসের সৌন্দর্যে নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button