স্টাফ রিপোর্টার : পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সিরাজগঞ্জে তিন দিন ব্যাপি ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও উদ্যোগ উন্নয়ন বিষয়ে “প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ” কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল ১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এনডিপি) এর আয়োজনে এনডিপি’র প্রধান কার্যালয়ের হলরুমে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
এনডিপির পরিচালক (ঋণ সহায়তা কর্মসূচি) মোসলেম উদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনডিপি’র নির্বাহী পরিচালক মো. আলাউদ্দিন খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর রেইজ প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. ফয়জুল তারিক চৌধুরী, প্রোগ্রাম অফিসার মো. জহিরুল ইসলাম ।
কর্মশালায় ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এনডিপি), মানব মুক্তি সংস্থা (এমএমএস), মর্ডাণ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এমডিও), রুরাল ডেভেলপমেন্ট সংস্থা (আরডিএস) এর কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণ পুলের কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন পিকেএসএফ এর প্রশিক্ষক এএসএম সারোয়ার আলম এবং কর্মশালার সার্বিক তত্তাবধান করেন এনডিপি রেইজ প্রকল্পের সমন্বয়কারী কৃষ্ণ দাস সাহা।
উল্লেখ্য, দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৮৫.১% অনানুষ্ঠানিক খাতে সম্পৃক্ত (Labour Force Survey, 2016-17)।
অনানুষ্ঠানিক খাতের ছোটো উদ্যোগসমূহকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে পিকেএসএফ ও বিশ্বব্যাংক-এর যৌথ অর্থায়নে বিগত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখ হতে সমগ্র দেশের Urban ও Peri urban এলাকায় পিকেএসএফ Recovery and Advancement of Informal Sector Employment (RAISE) নামক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
প্রকল্পের আওতায় কোভিড-১৯ এ ক্ষতিগ্রস্ত ৫০,০০০ জন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে তাদের ব্যবসায় উদ্যোগ পুনরায় চালু করতে সহায়তা করা; ৯০,০০০ জন তরুণ উদ্যোক্তাকে টেকসই ক্ষুদ্র উদ্যোগ পরিচালনা, জীবন দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ৩৫,০০০ জন তরুণকে অভিজ্ঞ ও সফল উদ্যোক্তাদের (মাস্টারক্র্যাক্টস পার্সন) নিকট অনানুষ্ঠানিক শিক্ষানবিস হিসেবে হাতে-কলমে কাজ শিখিয়ে উপযুক্ত কর্মে নিয়োজিত হতে সহায়তা করা হয়। অর্থাৎ প্রকল্পটির মাধ্যমে অনানুষ্ঠানিক খাতে সর্বমোট ১,৭৫,০০০ জন তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা টেকসই কর্মসংস্থানে সম্পৃক্ত হবে এবং তাদের মাধ্যমে আরো নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এ সকল তরুণদের একটি বড় অংশ অভিজ্ঞ ও সফল উদ্যোক্তাদের সাথে থেকে ব্যবসা ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি জ্ঞান লাভ করার সুযোগ পাবে। প্রকল্পের আওতায় তরুণ উদ্যোক্তাদের Psychometric Profiling করা হবে যার মাধ্যমে তাদের উদ্যোগ পরিচালনায় দক্ষতা এবং ঋণ ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা যাচাই করে অর্থায়ন করা সম্ভব হবে। এতে করে ব্যাপক সংখ্যক নতুন উদ্যোক্তা তৈরির সুযোগ হবে এবং ঋণের ঝুঁকিও হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রাক্কলিত মোট বাজেট ২৫২.৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক হতে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং পিকেএসএফ-এর নিজস্ব তহবিল হতে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হবে। এছাড়া, পিকেএসএফ-এর সহযোগী সংস্থাসমূহের প্যারালাল ফাইনান্সিং হিসেবে ২.৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের সংস্থান রাখা হয়েছে।
প্রকল্পটি ২০৩১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতেও ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। এছাড়া, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নীতি-কৌশল-অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি ও প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় বর্ণিত দক্ষ জনশক্তি তৈরির রুপরেখা অনুসরণ করে প্রকল্পটির নকশা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। অনানুষ্ঠানিক খাতের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং স্বল্প আয়ের পরিবারভুক্ত তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে টেকসই কর্মসংস্থানে নিযুক্ত হতে এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।