কামারখন্দসিরাজগঞ্জ

এনডিপি সমন্বিত কৃষি ইউনিটের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

এনডিপি “সমন্বিত কৃষি ইউনিট”এর কৃষি খাতের আওতায় কোকোডাস্ট মিডিয়া ব্যবহার করে সবজির চারা উৎপাদন এবং মালচিং পেপার ব্যবহার করে উচ্চমূল্যে ফসল উৎপাদনের  উপর দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।

১১ ও ১২ ডিসেম্বর এনডিপি কাটাখালি শাখায় দুই দিনব্যাপী এই কৃষক প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিলেন, সিরাজগঞ্জ খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা একেএম মহিদুল হক, বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি বিজ্ঞান ইনস্টিউট সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম, এনডিপির সহকারী পরিচালক (সিএসপি) সাইফুল ইসলাম, কামারখন্দ উপজেলার চর নুরনগর গ্রামের সফল কৃষি উদ্যোক্তা মিলন শেখ প্রমুখ।

এসময় উপপরিচালক তার বক্তব্যে বলেন মালচিং মূলত বিষমুক্ত ফসল চাষের একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। শীতকালে মালচিং ব্যবহার করলে মাটিতে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা ধরে রাখা সম্ভব হয় এবং গরমকালে মাটি ঠান্ডা থাকে। সঠিক মালচিং প্রয়োগে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণ রোধ করা যায়। মালচিং পেপার ব্যবহারে জমিতে আগাছা জন্মানোর কোন সুযোগ নেই। এ প্রযুক্তি ব্যবহারে জমিতে পানি সূর্যের তাপ ও বাতাসে দ্রত উড়ে যায় না। ফলে জমিতে রসের ঘাটতি হয় না এবং সেচ কম লাগে। মালচিং ব্যবহার করলে জমিতে প্রায় ১০ থেকে ২৫ ভাগ আর্দ্রতা সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। যেহেতু মালচিং প্রযুক্তি ব্যবহার করলে পানি কম লাগে ফলে সেচ খরচ বাঁচে, লাভ হয় বেশি।      

জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা বলেন কোকোডাস্ট মিডিয়ায় উৎপাদিত চারা অধিক শিকড়সমৃদ্ধ হওয়ার কারনে জমিতে সবজির চারা লাগানোর পরও চারা কখনো নেতিয়ে পড়ো। এই চার খুব সতেজ এবং শক্ত হওয়ার কারনে পোকামাকড়ের আক্রমন কম হয় শস্যের ও সবজির জীবনকাল বেড়ে যায় যার ফলে ফলন বৃদ্ধি পায়। মালচিং পেপারে কোকোডাস্ট মিডিয়ার চারা রোপন করলে কৃষক শতভাগ লাভবান হবে এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। এ পদ্ধতিতে চাষ করলে জমিতে আগাছা হয়না, বললেই চলে। মালচিং পেপারে কার্বন থাকার কারণে আদ্রতা ধরে রাখে এবং সারের গুনাগুন ঠিক থাকে ফলে ফলনও বৃদ্ধি পায়। একই মালচিং পেপার একাধিক সবজি ফসল চাষে ব্যবহার করা যায়। অন্যান্য সবজি ফসল যদি এই পদ্ধতিতে চাষ করা যায় তাহলে কৃষকরা বেশি লাভবান হবে। তবে এ পদ্ধতিতে প্রথমে অর্থ খরচ বেশি হলেও সামগ্রিক ভাবে লাভ ও অনেক বেশি হয়। কৃষি কর্মকর্তা বলেন, প্রদর্শনীর জন্য উপজেলার কয়েকটি জায়গায় এই পদ্ধতিতে কিছু চাষাবাদ করা হয়েছে।

আঞ্চলিক পুষ্টি বিজ্ঞান ইনস্টিউট এর মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তার দপ্তরের সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি বলেন বাংলাদেশে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্ত নিরাপদ খাদ্যের এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। সেজন্য নিরাপদ খাদ্যের উৎপাদন এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহনে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করেন।

সহকারী পরিচালক তার বক্তব্যে বলেন দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে যেসকল প্রশিক্ষকগণ আলোচনা করেছেন সে অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেন।

সফল খামারী মিলন শেখ কোকোডাসট মিডিয়ায় চারা কিভাবে উৎপাদন করা হয় বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রশিক্ষণে উপস্থিত কৃষকবৃন্দ আগামী দিনে মিলন শেখের উৎপাদিত চারা দিয়ে সবজি চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রশিক্ষণ সমাপনীতে প্রত্যেক কৃষককে কোকোডাস্টের চারা বিতরন করা হয়। প্রশিক্ষণে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কৃষি খাতের কার্যক্রম সচিত্র প্রতিবেদন দেখানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button