ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলগুলো পরিচালনার জন্য প্রাধ্যক্ষ, আবাসিক শিক্ষকসহ হল প্রশাসন থাকলেও বাস্তবে হলের নিয়ন্ত্রণ তাদের কাছে থাকে না। ছাত্রদের বিভিন্ন হলের কোন কক্ষে কে থাকবেন, তা নিয়ন্ত্রণ করে মূলত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ আছে কার্যত সমান্তরাল প্রশাসনের ভূমিকায়।
বিভিন্ন হলের কক্ষ দখল ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রায়ই ছাত্রলীগের বিভিন্ন পক্ষ সংঘাতে জড়ালেও এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থাও নিতে পারে না। গত সাড়ে ছয় মাসে কক্ষ দখল নিয়ে অন্তত ছয়বার সংঘাতে জড়িয়েছে স্যার এ এফ রহমান হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও মাস্টারদা সূর্য সেন হল শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। হল বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আবাসন-সংকটের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের বৈধ আসন পাওয়ার সুযোগ নেই। নানা কারণে প্রথম বর্ষের যেসব শিক্ষার্থী হলে থাকতে বাধ্য হন, তাঁদের উঠতে হয় ছাত্রলীগ-নিয়ন্ত্রিত কোনো একটি হলের গণরুমে। এর মধ্যে কোনো কোনো গণরুমে এক কক্ষে ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থীও থাকেন। গণরুমে থাকতে হলে শিক্ষার্থীদের নিয়মিতভাবে ছাত্রলীগের মিছিল–সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে যেতে হয়। একই সঙ্গে হলের গেস্টরুমে (অতিথিকক্ষ) ছাত্রলীগ নেতাদের ‘আদব শিক্ষার ক্লাসে’ বাধ্যতামূলকভাবে অংশ নিতে হয়৷ প্রথম বর্ষে গণরুমে রাখা থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের ধাপে ধাপে বিভিন্ন কক্ষে ‘শিফট’(স্থানান্তর) করেন ছাত্রলীগের নেতারাই।