সিরাজগঞ্জ

দিনের কাজ আধাবেলা, খেলা দেখব আধাবেলা

শামসুদ্দিন স্টেডিয়ামের ফুটবল পাগল আব্দুল হাকিমের কথা

সৈয়দ শামীম শিরাজী স্টেডিয়াম থেকে: সিরাজগঞ্জে শহিদ শামসুদ্দিন স্টেডিয়ামে চলছে বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাষা সৈনিক আনোয়ার হোসেন রতু ফুটবল লীগ। প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ফুটবল প্রেমিরা খেলা উপভোগ করছে।এরকম হাজারো দর্শক এর একজন  আব্দুল হাকিম। পেশায় শ্রমিক। দিনভর কায়িক পরিশ্রম করে দুবেলা আহার জোটায় পরিবারের। করোনা আর ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে দিনভর শ্রম দিয়েও কঠিন হয়ে গেছে পরিবারের খাবার জোটানো। এরমধ্যে এলো শামসুদ্দিন স্টেডিয়ামে ফুটবল প্রতিযোগিতা। হাকিমের মন ছটফট করে।  প্রতিদিন বিকেল হলেই মনের টানে ফুটবলের ভালোবাসায় চলে যায় স্টেডিয়ামে। উপভোগ করে ফুটবল খেলা।

হাকিমের বাড়ি শহরের পাশের খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের নলিছাপাড়া গ্রামে। পিতা মৃত  আব্দুল হামিদ।  ছোট বেলা থেকেই ফুটবলকে ভালোবাসে। শৈশব এবং যৌবনের প্রথম দিকে নিজেও খেলেছেন ফুটবল। কিন্ত হতে পারেননি নামীদামি ফুটবল খেলোয়াড়। তারপরও কমতি হয়নি ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা।

এবছর ২ সেপ্টেম্বর আনোয়ার হোসেন রতু ফুটবল প্রতিযোগিতার শুরু থেকেই আব্দুল হাকিম দেখছেন ফুটবল খেলা। এপর্যন্ত খেলা দেখতে কত খরচ হয়েছে? উত্তরে জানালেন ১৮ দিন একনাগারে খেলা দেখে তার খরচ হয়েছে ১ হাজার টাকা। কিন্ত এই ১৮ দিনে তার কামাইয়ে  লজ হয়েছে ৯ হাজার টাকা।

এতে তার সংসারের ক্ষতি হচ্ছে কিনা- ঘরের বউ খেলা দেখতে বাধা দেয় কিনা? গ্যালারিতে বসে হাকিমকে জিজ্ঞেস করলেই উত্তর আসে- এসব বিষয়ে সে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। বললেন, স্ত্রীকে জানিয়েছি মাস জুড়ে স্টেডিয়ামে খেলা দেখব। তুমি কিছু বলতে পারবে না।  দিনের আধা বেলা কামাই করে যা পাব, খেলা দেখার খরচ বাদে সব তুলে দেব তোমার হাতে। বাকীটা চালিয়ে নাও। খেলা শেষে দিনরাত কাম করে পুষিয়ে দেব।

প্রতিদিন খেলা দেখতে দেখতে এরমধ্যেই তার কাছে প্রিয় দল হয়ে উঠেছে রহমতগঞ্জ ইয়াং এ্যাসোসিয়েশন একাদশ।  তার পরেই দ্বিতীয় পছন্দের দল ইয়াং স্টার ক্লাব।  তৃতীয়  মাছুমপুর ক্রীড়া চক্র একাদশ। ফুটবল প্রেমিক হাকিমের মতে  এতিনটি দলই সিরাজগঞ্জে ফুটবল খেলোয়াড় গড়ার কারিগর। ফুটবল পাগল হাকিম শেষ কথা বলেই মাঠে খেলার দিকে তাকিয়ে বলল, মাঠে না এলে তার মন ভালো থাকে না। জানা যায়, এফুটবল প্রেমিককে অনেকেরই নজরে পড়েছে। এবছর আব্দুল হাকিমকে শ্রেষ্ঠ ফুটবল প্রেমিক দর্শক হিসেবে পুরস্কৃত করা উচিত বলে অনেকেই মনে করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button