সিরাজগঞ্জ সদর থানা সূত্রে জানা যায় গত ১৭ আগষ্ট সকাল সাড়ে ১০টায় অ্যাডভোকেট মো. সেলিম উদ্দিন রেজা তার মেয়ে সবুজ কানন স্কুলের ছাত্রী সদ্য এসএসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মোছা. সাদিয়া রেজাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। সাধারণ ডায়েরী করার পর ওইদিন রাত সাড়ে আটাটার দিকে শহরের পৌর এলাকার মাছুমপুর নিজ বাসা থেকে সাদিয়ার ফেইসবুক ফ্রেন্ড আরিয়ান নিশাত রিদমকে থানায় নিয়ে আসে। দুই রাত দুই দিন থানায় রিদমকে আটকে রেখে তার মোবাইল থেকে ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে সাদিয়ার ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ ও মেয়ের বাবার কান্না জড়িত কণ্ঠ রেকর্ড পাঠিয়ে মেয়ের অবস্থান জানার চেষ্টা করে সদর থানার ওসি, এসআই ছাইফুল ইসলাম এবং মেয়ের বাবা অ্যাডভোকেট সেলিম উদ্দিন রেজা। মেয়ের বাবা মেয়েকে অভয় দিয়ে ভয়েজ রেকর্ডটি পাঠান। ভয়েজে তিনি যে ছেলের সঙ্গে গিয়েছে সে খারাপ ও ভাল না, তুমি ওই ছেলের কাছ থেকে চলে এসো, আমি তোমার সব মেনে নেব। তুমি যা চাইবে তাই দিবো। মেয়ে দুএকটি ম্যাসেজের উত্তর দিলেও অবস্থান না বলায় ১৮ জুলাই রাতে আরিয়ান নিশাত রিদম যে ছেলের সাথে চলে গিয়েছে সে ছেলে মো. হাবিবুর রহমান এবং সাদিয়ার সহপাঠি সবুজ কানন স্কুলের একই ক্লাসের ছাত্রী সিরাজগঞ্জ শহরের এস এস রোডের বাবুলের মেয়ে প্রিয়াকে আসামী করে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। সিরাজগঞ্জ সদর থানায় মামলা নম্বর-৪৩ তারিখ-১৮/৭/২০২৩।
মামলার আইও এসআই ছাইফুল ইসলাম জানান, মামলায় রিদমকে গ্রেফতার দেখিয়ে ১৯ জুলাই এবং প্রিয়াকে ২০ জুলাই রাতে গ্রেফতার করে ২১ জুলাই কোর্ট কোর্টে প্রেরণ করি। মামলার আইও ছাইফুল ইসলাম জানান, মামলার ১৮দিন পর ৪আগষ্ট রাতে সাদিয়া একাই সিরাজগঞ্জ সদর থানায় চলে আসে। ৫ জুলাই সাদিয়াকে কোর্টে প্রেরণ করা হলে ম্যাজিস্ট্রেট ২২ ধারায় জবান বন্দি শেষে সাদিয়াকে রাজশাহী সেভ হোমের পাঠান।
মেয়ে কিভাবে উদ্ধার হলো বা থানায় চলে এলো জানতে চাইলে আইও জানান, মেয়েটি ঢাকার মতিঝিলের একটি বাসায় এক ছেলের সঙ্গে ছিল। মেয়ে উদ্ধার এবং মামলার তদন্তের স্বার্থে মেয়ের বাবার কাছ থেকে নেয়া মেয়ের ইমু নাম্বারে আমি (আইও) প্রতিদিনই মেয়ের সাথে কনভারসেশন করি, তাকে কাউন্সিলিং করি। তার কারণে তার মা-বাবা সহ অনেকেই বিপদে আছেন বিষয়টি সাদিয়াকে বুঝাতে সক্ষম হই। তখন সে ওই ছেলের সহযোগীতায়, যার কাছে ছিল সে সাদিয়াকে বাসে তুলে দেয়। সাদিয়া বাস যোগে কড্ডার মোড়ে এসে সিএনজি চালিত অটোরিক্সায় উঠে চালকের সাথে কথা বলে দেয়, তখন আমি সিএনজি চালককে সাদিয়াকে থানায় আনতে বললে সিএনজি চালক সাদিয়াকে থানায় পৌছে দিয়ে যায়। মেয়েকে পাওয়া গেয়েও মামলার ২৫ দিন পার হলেও অপহরণকারী হিসেবে মামলায় উল্লেখ করা মো. হাবিবুর রহমান গ্রেফতার হয়নি।