আশরাফুল আলম, কাজীপুর প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে আগাম জাতের টমেটো চাষে অধিক লাভের মুখ দেখেছেন চাষীরা। খেতে সঙ্গী ফসল হিসেবে পোটল, ঝিঙা, শসার আবাদ করছেন তাঁরা। এতে জমিও পতিত থাকছে না, অন্যদিকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতা ফিরছে কৃষকদের সংসারে। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই এ অঞ্চলে বাড়ছে টমেটোর চাষ। শুধু ধানের চাষ না করে এখন সবজির আবাদে ঝুকছেন প্রান্তিক চাষীরা।
গত মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের রৌহাবাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, দিগন্তজোড়া টমেটোর খেতে চাষীরা পরিচর্যা করছেন। কেউ বা আবার খেত থেকে পাকা টমেটো সংগ্রহ করছেন বাজারজাত করার জন্য। অন্যদিকে খেত পরিদর্শনে গেছেন কাজীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম। সাথে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকেও নিয়ে গেছেন।
এসময় কথা হয় মোস্তফা নামের এক চাষীর সাথে। তিনি বলেন, আমি ডিগ্রী পাশ করে কৃষিকাজ করছি। এবছর ৩০ শতাংশ জমিতে টমেটোর চাষ করেছি। টমেটোর মাঁচার নিচে আবার পটল, ঝিঙা, শসার বীজ বোপণ করেছি। টমেটো শেষ হওয়া মাত্র ওই মাঁচায় শসা উঠিয়ে দেব।
সবুজ মিয়া নামের আরেক চাষী জানান, কোনো প্রকার বিষ প্রয়োগ ছাড়াই টমেটো চাষ করছি কৃষি স্যারদের পরামর্শ নিয়ে। শুধু জৈব, কেঁচো আর ইউরিয়া সার ব্যবহার করেছি। কোন সমস্যা হলে স্যারেরা মাঠে চলে আসে।
আব্দুল হামিদ বলেন, টমাটু খুব ভালো ফলন দিছে এবার। কৃষি স্যারগোরে কথা মতে জমিতে আগেই টমাটুর চারা লাগাছিলাম। প্রথম প্রথম ২৫-২৭শ টেহা মণ বেচছি। আরো এক মাস ফলন দিবো। খরচা বাদে প্রতি ডিসিমালে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা লাভ হবো।
কাজীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় এবছর কাজীপুরে টমেটোর আবাদ বেশী হয়েছে। পুরো উপজেলায় প্রায় এক হাজার বিঘা জমিতে টমেটোর চাষ হয়েছে। এবছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল সাতশ বিঘা। বিউটি, বাহুবলী, সফল, হিরো ও হিরোপ্লাস জাতের টমেটোর আবাদ হয় এ অঞ্চলে। তবে কৃষকরা বিউটি জাতের আবাদ বেশী করেছেন। প্রতি গাছ ৫ থেকে ১০ কেজি টমেটো দেয়। প্রতি শতাংশে ১শ’র অধিক গাছ লাগানো যায়।
কাজীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রেজাউল করিম বলেন, শীতকালীন সবজি হিসেবে আগাম টমেটো চাষের দিক থেকে কাজীপুরের টমেটো জেলায় এগিয়ে রয়েছে। আগাম বলে এ অঞ্চলের চাষীরা দামও ভালো পায়। এখানকার টমেটো জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীতেও যায়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। আমি নিজেও তাঁদের ফসল দেখতে যাই।