মো. সাহেব আলী, উল্লাপাড়া প্রতিনিধি: ঢাকা- উল্লাপাড়া -খুলনা রোডে চলাচলকারী আন্তঃনগর সুন্দরবন ট্রেন বন্ধ হওয়ায় ওই রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। এছাড়া, আগামী ১লা জুলাই থেকে ওই রুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি তুলে নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে । এই রুট থেকে আন্তঃনগর ট্রেন দুটির চলাচল বাতিল করলে সরকার মাসে প্রায় ২ কোটি টাকা আয় থেকে যেমন বঞ্চিত হবে, তেমনি ওই রুটে চলাচলকারী ৪টি জেলার হাজার হাজার ট্রেন যাত্রী চরম দুর্ভোগে পড়বে।
ঢাকা-উল্লাপাড়া-খুলনা রুটে চলাচল কারি সুন্দরবন ট্রেনটি প্রতিদিন সকাল ৮ টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে জয়দেবপুর -টাঙ্গাইল – বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম স্টেশন পার হয়ে শহিদ এম মনসুর আলী, জামতৈল, উল্লাপাড়া, ভাঙ্গুড়া, চাটমহোর, মুলাডুলি, ঈশ্বরদী, যশোর হয়ে বিকেল ৬ টায় খুলনায় পৌঁছাইত । আবার খুলনা থেকে রাত্রি ১০ টায় ছেড়ে এসে সকাল ৬ টায় ঢাকায় পৌঁছাইত । এতে খলনা ও যশোরের বিভিন্ন কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত টাংগাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোর জেলার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, জনসাধারণ ও বেনাপোল হয়ে ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া ট্রেন যাত্রীরা খুব সানন্দে যাতায়াত করতে পারতো ।
গত ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর আন্তঃনগর সুন্দরবন ট্রেনটি এ রুট থেকে তুলে নিয়ে খুলনা-ভাঙ্গা- পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা রুটে চলাচল করায় বিপাকে পড়েছে টাংগাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোর জেলার ট্রেন পথে চলা হাজার হাজার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ যাত্রীরা ।আর রেল কতৃপক্ষ প্রতি মাসে ১০ টি রেল স্টেশন থেকে প্রায় ১ কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । সুন্দরবন ট্রেন তুলে নেওয়ার পর খুলনা-যশোর ও বেনাপোল হয়ে ভারতে যাওয়ার একমাত্র ভরসা ছিলো চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি। কিন্তু সেই চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আগামী পহেলা জুলাই থেকে তুলে নিয়ে খুলনা- ভাঙ্গা -পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় চলাচল করবে বলে শোনা যাচ্ছে।
ঢাকা-উল্লাপাড়া-খলনা রুটে চলাচলকারী হাজার হাজার যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা না করে ট্রেন দুটি তুলে নেওয়ায় ৪টি জেলার হাজার হাজার ট্রেন যাত্রী চরম দুর্ভোগে পরবে ।
ওই ট্রেন দু’টি তুলে নেওয়ায় উল্লেখিত স্টেশন গুলি সংলগ্ন হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্টের শত শত হোটেল শ্রমিক বেকার হয়ে মানবতার জীবন জাপন করবে । উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন লাকী হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্টের মালিক হাজী মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন জানান ট্রেনের যাত্রীদের ঘিরেই স্টেশন গুলোতে শত শত হোটেল ব্যবসা চালু রয়েছে । অন্তঃনগর সুন্দরবন ট্রেন তুলে নেওয়ায় হোটেল ব্যবসায় অনেকটাই আঘাত এনেছে । তার পরেও যদি এ রুট থেকে চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি তুলে নিয়ে অন্যরুটে দেয় তাহলে শত শত হোটেল শ্রমিক বেকার হয়ে মানবতার জীবন-যাপন করবে এবং এ রুটে চলাচল কারি হাজার হাজার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী এবং এ অঞ্চল থেকে ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে ।
ট্রেন যাত্রী আব্দুর রহিম, বেল্লাল হোসেন, সবুজ মিয়া জানায় সুন্দরবন ট্রেনটি এ রুট থেকে তুলে নেওয়ায় উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ, টাংগাইল থেকে যশোর, খুলনা ও বেনাপোল হয়ে ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পরেছে ।
উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং মাস্টার মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এবং শহিদ এম মনসুর আলী রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং মাস্টাট মোঃ হাফিজুর রহমান হিরা জানান আন্তঃনগর সুন্দরবন ট্রেনটি তুলে নেওয়ায় প্রতি মাসে ১০ টি রেলওয়ে স্টেশন থেকে রেল কতৃপক্ষ প্রায় ১ কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । আগামী পহেলা জুলাই থেকে আন্তঃনগর চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি তুলে নেওয়ার কথা শুনেছি । যদি চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি তুলে নিলে প্রতি মাসে রেল কতৃপক্ষ আরও ১ কোটি কাটা আয় থেকে বঞ্চিত হবে এবং এ অঞ্চলের হাজার হাজার ট্রেন যাত্রী চরম দুর্ভোগে পড়বে । উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. আব্দুল বাতেন জানান একটি ট্রেন কমে গেলে যাত্রীদের সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক । তবে চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি তুলে নিবে এমন কোনো সরকারী নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি ।