তাড়াশসিরাজগঞ্জ

তাড়াশে হারিয়ে যাচ্ছে পাতিলে ও কড়াইয়ে ধান সিদ্ধ পদ্ধতি

চলনবিল অধ্যূষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশে হারিয়ে যেতে বসেছে পাতিল ও কড়াইয়ের মাধ্যমে ধান সিদ্ধ করার সেই পুরানো পদ্ধতি।

আগের দিনে অগ্রাহয়ন মাস শুরু হলেই গ্রাম এলাকায় রোপা ও বোনা আমন ধান কাটার ধূম পড়ে যেত। সেই সাথে প্রতিটি পরিবারের সারা বছরের বা কিছুদিনের জন্য ধান সিদ্ধ করে চাল বানিয়ে ঘরে সংরক্ষণ করে রাখা হতো। ওই ধান সিদ্ধ করার আগেই বেলে ও আঠালো লাল মাটি মিশিয়ে পাতিল কিংবা কড়াইয়ের মাপ অনুযায়ী চুলা তৈরী করা হতো।

এ কাজে গ্রামের মায়েরাই বেশির ভাগ দায়িত্ব পালন করতেন। আগের দিনে ধান ভিজিয়ে রেখে পরদিন ভোর রাতে পাতিল বা কড়াই ওই চুলায় (আখায়) বসিয়ে ধান সিদ্ধ শুরু করা হত। চলতো যতক্ষণ খোলায় রোদ প্রবেশ না করে। এতে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হতো জমিতে ধান গাছের অবশিষ্টাংশ ধানের শুকানো খড়। সময়ের পরিক্রমায় ওই পদ্ধতিতে ধান সিদ্ধ এখন আর চোখে পড়ে না বললেই চলে এমনটাই বললেন উপজেলার তালম ইউনিয়নের গুল্টা গ্রামের গৃহবধূ মালেকা বেগম (৩৬)।

উপজেলার বেত্রশীশ গ্রামের ওমরজান বেওয়া (৬৫) জানান, আগের দিনে ধান সিদ্ধ করার জন্য প্রায় ১০ দিন আগে থেকেই প্রস্তুতি গ্রহন করা হতো। বাড়ির গৃহিনীরা ধান সিদ্ধর দিন ভাত রান্না করা সময় পেত না। তাই তারা আগের দিন রাতেই সকালে খাওয়ার জন্য বাড়তি ভাত রান্না করে রাখতো।

দেমীগ্রাম ইউনিয়নের আরংগাইল গ্রামের বৃদ্ধ সরশের আলী (৭৫) জানান, এখন আর মাটির পাতিল বা কড়াইয়ে কেউ ধান সিদ্ধ করে না। বড় বড় ড্রামের তৈরী চালা বানিয়ে ধান সিদ্ধ করা হয়। এক চালায় প্রায় ৩ থেকে ৪ মন ধান ধরে। এক চালা ধান দিয়ে দ্রুত সময়ে কম জ্বালানী ব্যবহার করে ধান সিদ্ধ করা যায়। ফলে সময় ও জ্বালানী দুটোই সাশ্রয় হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button