স্টাফ রিপোর্টার : চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় চলতি মৌসুমে সোনালী আঁশ পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে পাট কাটা, জাগ দেয়া ও ধোয়ার পাশাপাশি নতুন পাট হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে। পাটের পাশাপাশি এ মৌসুমে পাট খড়ির বেশ কদরও বেড়েছে। আর পাট খড়ি বিক্রি করে কৃষকেরা বাড়তি অর্থ উপার্জনও করছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পাট চাষীদের বাড়ি থেকে পাটখড়ি কিনে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় পাট খড়ি ব্যবসায়ীরা। বাজারে পাটের ভাল দামের পাশাপাশি পাটখড়ির বেশ চাহিদা ও ভাল দাম পাওয়া কৃষকেরা অনেকটাই খুশি।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় জানিয়েছে, এ বছর তাড়াশ উপজেলার ৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৭৪৫ হেক্টর জমিতে তোষা, মেছতা ও কেনাফ জাতের পাটের চাষাবাদ করেছে কৃষকেরা। তবে মেস্তা জাতের পাট বেশি চাষ হয়েছে। কৃষকেরা পাট ছাড়াও পাট খড়ি বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা গ্রামে গ্রামে কৃষকের বাড়ি বাড়ি থেকে পাট খড়ি কিনে শহরে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। সাধারণত ওই পাটখড়ির পাবনা জেলার বেড়া, সাথিয়া, আতাইকুলা উপজেলায় বেশ চাহিদা রয়েছে। কারণ হিসেবে পাটখড়ি ব্যবসায়ী উপজেলার নাদোসৈয়দপুর গ্রামের সালাহ উদ্দিন বলেন, ওই সকল উপজেলায় পাট খড়ি বাড়ি ঘরে বেড়া, সবজি ক্ষেতের বেড়া, মাচায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাছাড়াও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় তামাক শুকানোর ঘর তৈরীর কাজে পাট খড়ি ব্যবহার হয়ে থাকে। এ ছাড়াও বর্তমানে ব্যাপক হারে পার্টিক্যাল বোর্ড তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে পাট খড়ি। অন্যদিকে পাট খড়ি পুড়িয়ে তার ছাই ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলী মাঠে।
উপজেলার হামকুড়িয়া গ্রামের পাট চাষী মো. আক্কাস আলী জানান, এবার তিনি ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। জমির পাট থেকে যে পাট খড়ি পেয়েছেন তা ভাল ভাবে শুকিয়ে পরিষ্কার করে বিক্রি করতে পারলে তা থেকে ২০-২৫ হাজার টাকা বাড়তি আয় হবে তাঁর। তবে এ সময় বৃষ্টিপাত বেশী থাকায় পাট খড়ি শুকাতে একটু বেশী সময় লাগছে। তিনি আরো জানান, পাট খড়ি সরাসরি চারকল বোর্ড ফ্যাক্টরীতে দিতে পারলে আরও বেশি লাভবান হওয়া যেত। এবার পাটের দামও ভালো। পাশাপাশি প্রতি আঁটি (হাতা) পাট খড়ি চার টাকা থেকে পাঁচ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর এক’শ আঁটি পাটখড়ি ৪০০ টাকা থেকে সাড়ে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে কৃষকেরা জ্বালানী চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি অর্থ ঘরে তুলতে পারছেন। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চলতি বছর তাড়াশে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে পাট চাষ করেছেন কৃষক। ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। আর পাটের পাশাপাশি পাট খড়িও বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন তাঁরা।