রায়গঞ্জ প্রতিনিধি: রায়গঞ্জে কল-কারখানার বিষাক্ত বর্জে ফুলজোড় নদীর পানি ভয়ানক দূষণ এ ভেস্তে যেতে বসেছে রায়গঞ্জ পৌরসভার সুপেয় পানি সরবরাহের প্রকল্প। এতে বিশাল অঙ্কের সরকারি অর্থ অপচয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ প্রকল্পে নদীর পানি শোধন করে পৌরবাসীর মধ্যে সুপেয় পানি সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশের ৩০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় রায়গঞ্জ পৌরসভা এলাকায় প্রকল্পটি এখন চলমান। বাংলাদেশ সরকার, বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক যৌথভাবে এতে অর্থায়ন করেছে এবং জন্যস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর রায়গঞ্জ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে।
সরেজমিনে গেলে পৌর মেয়র আব্দুল্লাহ আল পাঠান জানান, ফুলজোড় নদী তীরে পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডে পালপাড়ায় চলছে এই প্রকল্পের কাজ। ইতোমধ্যেই এর ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পরিশোধিত পানি পাইপ লাইনের মাধ্যমে দুই হাজার পৌর পরিবারের মাঝে সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু পার্শ্ববর্তী বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন কল-কারখানার নির্গত বিষাক্ত বর্জ্যে ফুলজোড় নদীর পানি মারাত্মক দুষিত হওয়ায় প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন দুরূহ হয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরসহ ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
জন্যস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর রায়গঞ্জের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, নদীর পানি উত্তোলন করে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের (ডাব্লিউ টি পি) মাধ্যমে সুপেয় করে পাইপ লাইনে সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি নদীর পানি এত বেশি দুষিত হয়ে পড়েছে যে নদীর মাছসহ বিভিন্ন জলজপ্রাণি মরে ভেসে উঠছে। এই পানি আমাদের এই ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে সুপেয় করা সম্ভব নয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পানি সরবরাহ এবং স্যানিট্রেশনের ড্রেন ও পয়ঃ নিষ্কাশন প্রকল্প বাবদ মোট বরাদ্দ হয়েছে ৩০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসে। শেষ হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে।
নদীর পানি দুষণের ব্যপারে যোগযোগ করলে পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রাজিয়া সুলতানা জানান, খবর পেয়ে তিনি ফুলজোড় নদী সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন এবং বিষাক্ত পানির স্যাম্পল সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা করতে দিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সিরাজগঞ্জ প্রতিদিনকে বলেন, নদীর পানি দুষণ রোধে যথা শিঘ্র প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।