আশিক সরকার, কামারখন্দ প্রতিনিধি : ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতি শতক জমিতে ৩৫-৪০ টাকায় পাওয়ার টিলার (ট্রাক্টর) দিয়ে জমির হাল চাষ করা হচ্ছে। যে হালচাষ গতবার ছিল ২০-২২ টাকা অর্থাৎ প্রতি ডিসিমাল জমিতে ১৮-২০ টাকা বেশি দিয়ে হাল চাষ করা হচ্ছে তাছারা ধান রোপনে মজুরি বাবদ খরচ বেড়েছে অনেক । এদিকে ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা বেড়েছে। সেই সাথে বেড়েছে মজুরির দামও। সারের দাম বৃদ্ধি, শ্রমিক ব্যয় ও আনুষঙ্গিক যে ব্যয় হবে, তাতে চলতি মৌসুমে আমন চাষে লোকসান হবে। চলতি আমন মৌসুমে উৎপাদন ব্যয় উঠবে কিনা-তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকের ।
জেলার কামারখন্দ উপজেলার নুর নগর তালপট্টি গ্রামের কৃষক লিটন হোসেন বলেন, কিছুদিন আগেও হালচাষ বাবদ প্রতি বিঘা ৯০০ টাকা খরচ হলেও ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে প্রতি বিঘা এখন ১ হাজার ৬০০ টাকা দিতে হচ্ছে। অপরদিকে ইউরিয়া সারের দাম আগে ছিল ১৬ টাকা কেজি। বর্তমানে সরকার দাম বৃদ্ধি করে ২২ কেজি করলেও খোলা বাজারে ২৪ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এখন ফসল আবাদ করাই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে প্রতি মণ ধানের উৎপাদন ব্যয় ১ হাজার ৫০০ টাকা পড়বে।
একই উপজেলার রসুলপুর গ্রামের কৃষক রইচ উদ্দিন জানান, আমন মৌসুমে আমি কয়েক বিঘা জমিতে ধান রোপন করছি। কিন্তু ডিজেলের দাম বাড়ায় সেচ ও হালচালের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এদিকে কেজিতে ৬ টাকা বেড়ে ২২ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে ইউরিয়া সার। সব মিলিয়ে ধান আবাদ করা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ট্রাক্টর চালক রহমত আলী বলেন, ডিজেলের দাম হঠাৎ করে বেড়েছে। গত বছর ২০-২২ টাকা ডিসিমাল করে চাষ দিয়েছি এবার ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় চাষ দেওয়া হচ্ছে। কৃষকের সমস্যা হচ্ছে তবে আমাদের কিছু করার নেই।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, ইউরিয়া সার কেজিতে ৬ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমানো ও ডিএপি সারের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন বাড়ানোর জন্যই সরকার ইউরিয়া সারের মূল্য বাড়িয়েছে। জ্বালানি তেলের জন্য কৃষকের সমস্যা হতে পারে তবে সারের জন্য সমস্যা হবে না।
কামারখন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত জানান, চলতি মৌসুমে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়ে ৫ হাজার ২৮০হেক্টর। ইতোমধ্যে ২ হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে চারা বপন করা হয়েছে। সারের কোন সংকট নেই। সারের বাজারে নিয়মিতই মনিটরিং করা হচ্ছে। এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আমনের বাম্পার ফলন হবে।