সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ এলাকায় ফুলজোড় নদী দূষণের দায়ে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার দুই কারখানাকে মোট ১৫ লাখ ৩৫ হাজার ৪০ টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। একই সঙ্গে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৬ জুন) পরিবেশ অধিদপ্তরে কারাখানা দুইটির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে পরিবেশ দূষণ বিরোধী অভিযান ও পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শুনানী শেষে এ জরিমানা করা হয়।
প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শেরপুর উপজেলার রাজাপুর এলাকার এস আর কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে ১০ লাখ টাকা ও একই উপজেলা ছোনকা এলাকার মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেডকে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৪০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. রেদওয়ান ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পরিবেশ দূষণ বিরোধী অভিযান ও পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট উইংয়ের পরিচালক মোহাম্মদ মাসুদ হাসান পাটোয়ারী শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানি শেষে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত ক্ষতিসাধন ও নদীদূষণের অপরাধে এই দুই কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এস আর কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে ১০ লাখ টাকা জরিমানার পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অপরদিকে মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেডকে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৪০ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ওই দুইটি কারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য ফেলার কারণে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা থেকে শুরু করে নলকা পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকায় ফুলজোড় নদীর ভয়াবহ দূষণের কবলে পড়ে। পানি বিষাক্ত হয়ে মাছসহ জলজ প্রাণী মারা যায়। ওই পানিতে গোসল করে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন মানুষ ও মারা যায় গবাদি পশু। সর্বশেষ অত্র এলাকায় ফুলজোড় নদীতে খাঁচায় চাষ করা ২ শতাধিক মৎস্যজীবির ১৫ কোটি টাকার মাছ মারা যায়। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরের নজরে আসে। পরে অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট উইংয়ে একটি টিম ঘটনাস্থল ও ওই কারখানা দুইটি পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। নমুনা পরীক্ষা করে প্রমাণিত হয়, ওই দুটি কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যেই নদীর পানি দূষিত হয়েছে। মঙ্গলবার শুনানী শেষে দুই কারখানাকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।