কামারখন্দ প্রতিনিধি: বিশ্বাসে হরি মিলে, তর্কে বহুদুর’! নিজেদের পৌরনিক এই চিন্তাভাবনা ও বিশ্বাস থেকেই সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের রায় দৌলতপুরের গোপালপুর গ্রামে বট-পাকুড়ের বিয়ে সম্পন্ন হলো। ধুতি-টোপড় ও শাখা-সিঁদুর পরিয়ে সনাতন ধর্মালম্বী রীতি অনুসারে মহ-ধুমধামে ওই বিয়ে সম্পন্ন হয়।
গত শুক্রবার বিকেল ৪টা লগ্নে ওই গ্রামের তাঁত মালিক শীতল সরকারের বাড়ীতে হিন্দু শাস্ত্রের সকল নিয়ম মেনে বিয়ে সম্পন্ন হয় বট-পাকোড় গাছের। এ বিয়েতে সাত শতাধিক অতিথি বিয়েতে অংশ নেন। আয়োজক ও অতিথিদের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থেকে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ পাকোড় ও বট গাছের বিয়ে দেখতে ভীড় জমায়।
বিয়ের আয়োজক শীতল সরকার বলেন, আমার বাড়ীর একটি তালগাছে প্রায় ১৫ বছর আগে একটি পাকোড় গাছের জন্ম হয়। তার বেশ কয়েক বছর পর পাকোড় গাছের পাশেই জন্ম হয় আরেকটি বট গাছের। তিনি বলেন, হিন্দু শাস্ত্র মতে পাশাপাশি পাকোড় গাছ ও বট গাছের জন্ম হলে বিয়ে দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু নানা সমস্যার কারণে সেই পাকোড় ও বট গাছের বিয়ের আয়োজন করতে পারিনি। পাকোড় ও বট গাছের বিয়ে না দেওয়ায় আমার পরিবারে নানা সংকট ও সমস্যা দেখা দেয়। এসব সমস্যা ও সংকট কাটাতে পাকোড় ও বট গাছের বিয়ে দিতে হবে বলে আমি সহ আমার পরিবারের কয়েক সদস্য একাধিকবার স্বপ্ন দেখি। তারই ধারাবাহিকতায় পাকোড় ও বট গাছের এই বিয়ের আয়োজন।
গোপালপুর গ্রামের দেবাশীষ মন্ডল মিঠুন ও আনন্দ মোহন মজুমদার বলেন, অনেক দিন ধরেই শুনছি পাকোড় গাছ ও বট গাছের বিয়ে হবে। অনেক প্রতিক্ষার পর শুক্রবার বিকেলে পাকোড় গাছকে ধুতি,পাঞ্জাবি, মুকুট এবং বট গাছকে শাড়ী, শাখা, সিঁদুর, মুকুট পড়িয়ে আনুষ্ঠানিক বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়েতে পাকোড় গাছকে বর ও বট গাছকে কনে সাজিয়ে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। পাকোড় গাছ ও বট গাছের বিয়ে উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পুরো গ্রামে এক মহানন্দের সৃষ্টি হয়। পাকোড়-বটের বিয়ে উপলক্ষে আলোক সজ্জা আর ঢাক ঢোলের পাশাপাশি সাউন্ড বক্সে নানা গান বাজিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অতিথিরা। সন্ধ্যায় আমরা বিয়ের আয়োজক শীতলের বাড়ীতে গ্রামের সবাই নৈশভোজে অংশ নেই।