কমছে ফসলি জমি, বন্যার আশঙ্কা
চৌহালী প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে অবৈধভাবে নদীর পাড় ও ফসলি জমির মাটি কেটে ট্রাক্টর ব্যবহার করে তা বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। ড্রেজার দিয়ে বালি উত্তোলন করে রীতিমত মাটি বিক্রির মহোৎসবে মেতেছে চৌহালীর ভুমিদস্যু ও বালু ব্যবসায়ী চক্র। ফলে একদিকে দিন দিন ফসলি জমি শেষ হয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে নদীর পাড় থেকে মাটি কাটায় বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকা সহজে বন্যা কবলিত হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীরা।
এছাড়াও এসব মাটি বহনে ছোট রাস্তাগুলোতে ভারী ট্রাক্টরের চাকায় সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। গতকার বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার খাষকাউলিয়া, চরজাজুরিয়া, খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় ফসলি জমিতে মাটি কেটে জমি নষ্ট করা হচ্ছে! সরকারি রাস্তা ও পাকা সড়ক ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি করা হচ্ছে। ফলে স্থানীয় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অপরদিকে জোতপাড়া, আজিমুদ্দিন মোড় যমুনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের পাশ থেকে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। এতে তীর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে এছাড়াও খাষকাউলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ খাষকাউলিয়া গ্রামে, খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের শাকপাল গ্রামে এখনো ড্রেজার চলমান, বাঘুটিয়া, খাষপুখুরিয়া, খাষকাউলিয়া ও ঘোরজান ইউনিয়নের এলাকাতেও ভূমি দস্যুরা তাণ্ডব চালাচ্ছে।রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় ব্যাপক শব্দে একদিকে ড্রেজার ওপর দিকে ট্র্যাক্টর(মাটি ভর্তি কাকরা গাড়ি দাপিয়ে দাপিয়ে চলছে। ইতোপূর্বে কোন কোন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করলেও ৭২ ঘন্টা পার হতে না হতেই তারা আবার ফিরে গেছে সাবেক রুপে। এছাড়াও মাটি বোঝাই করে কাঁচা পাকা রাস্তায় চলছে একাধিক ভারী যানবাহন। এতে করে নতুন পুরাতন রাস্তা গুলো নিমিষেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।
আবার সারাদিনে একটি রাস্তায় একাধিক গাড়ী একটানা চলার কারনে ব্যাপক ধুলাবালির সৃষ্টি হচ্ছে। তাতে স্কুলগামি কমল মতি শিক্ষার্থী ও ছোট বড় সবাইকেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অসুস্থ্য হয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে শিশুসহ বয়স্কদের। এদিকে পাঁকা রাস্তায় মাটি বোঝায় ট্রাক থেকে খসে পড়া মাটির উপরে একটু বৃষ্টি পড়লেই সেসব সড়কে স্লিপ কেটে ঘটতে পারে সড়ক দুর্ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উক্ত মাটি ব্যবসায়িরা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব এলাকায় ফসলি জমিসহ নদীর পাড় থেকে দিন রাত মাটি বাণিজ্য করে আসছে। ভূমিদস্যু চক্রটি এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বাঁধা দেওয়ার সাহস পায় না। সাহস করে কেউ প্রতিবাদ করলেই চাঁদাবাজির মামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি শিকার হতে হয় তাদের। স্থানীয়রা জানান, মাটি ব্যবসায়িরা ভূমি অফিসসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে নদীর পাড়, সমতল ভূমি এবং ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিভিন্নস্থানে বিক্রি করে আসছে। সরকার নিষিদ্ধ ট্যাক্টর গাড়ি(মাটির টাক) রাস্তা ঘাট ও ড্রেজার অবৈধ ভাবে নদ-নদী দখল করে বালু বানিজ্য অবয়াহত রেখেছে। ট্র্যাক্টর, নছিবন করিমন সহ নিষিদ্ধ গাড়ি চালকরা প্রশিক্ষন, ডাইভিং ও গাড়ির কাগজ কিছুই ইেন। তারা রাস্তা ও সড়ক দখল করে দাপিয়ে চালাচ্ছে গাড়ি এতে অবাদে দুর্ঘটনা ঘটে চলছে। দুর্ঘটনায় মারা গেছে শাকপাল গ্রামের এক বৃদ্ধা,খাষপুখুরিয়ার এক মহিলাসহ অনেকই।
এব্যাপারে চালকদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলছে আমরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ও ভিট দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি। চৌহালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, মাটি ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। যারাই অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।