স্টাফ রিপোর্টার : সিরাজগঞ্জে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২২ অর্জনের জন্য পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের রণাঙ্গনের যোদ্ধা কথাসাহিত্যিক প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ইকতিয়ার মমিন চৌধুরীকে পৃথক পৃথক দুটি অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা দেয়া হয়। গতকাল ৪ ফেব্রুয়ারি, শনিবার বিকেলে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয়ে জেলার সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার পক্ষ থেকে ইকতিয়ার চৌধুরীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। একই দিনের সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ প্রেস ক্লাব ভবনের ২য় তলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মাহবুবুল হক পাঠাগার কার্যালয়ে অপর একটি সংবর্ধনা ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পাঠাগার কর্তৃপক্ষ।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কার্যালয়ে দেয়া সংবর্ধনায় সভাপতিত্ব করেন পলাশ ডাঙা যুব শিবিরে সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. বিমল কুমার দাস। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংবর্ধিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকতিয়ার মমিন চৌধুরী ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কে.এম হোসেন আলী হাসান, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ তালুকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফিরোজ ভূইয়া, সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী সেখ, জেলা জাসদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই তালুকদার,পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের সর্বাধিনায়ক (সিএনসি) বীর মুক্তিযোদ্ধা সোরহাব হোসেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম শফি, সংরক্ষিত আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য সেলিনা বেগম স্বপ্না, সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল রহমান ফজলুসহ অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন আলী আহমেদ টুংকু। অনুষ্ঠানে সিরাজগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে সন্ধ্যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মাহবুবুল হক পাঠাগারে আয়োজিত অপর একটি সংবর্ধনা ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাঠাগার এর সভাপতি, দৈনিক সিরাজগঞ্জ প্রতিদিন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ইসমাইল হোসেন। অনুষ্ঠানের প্রারাম্ভে অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান পাঠাগার এর প্রধান উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিমল কুমার দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুকুমার চন্দ্র দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম, পাঠাগার এর সভাপতি ইসমাইল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবু বকর ভুইয়া।
সভায় উপস্থিত সংবর্ধিতজন বীরমুক্তিযোদ্ধা ইকতিয়ার মমিন চৌধুরী, সারাদেশে বেসরকারি পাঠাগারে অভিন্ন বইপাঠ কর্মসূচি-২০২২ কবি মিনার মনসুর এর গ্রন্থেও পাঠক প্রতিক্রিয়ায় মাহবুবুল হক পাঠাগার এর অংশগ্রহণকারী বিজয়ী প্রতিযোগী আশিক আহমেদ, প্রারম্ভা কাফি ও শিশু পাঠক ইসফার রহমান খানের হাতে সনদ তুলে দেন।
পরে পাঠাগার এর পক্ষ থেকে ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ও ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর প্যারিসে ইউনেস্কো প্রধান কার্যালয়ে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রক্রিয়ার দেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্বকারী ও এবছর বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক ইকতিয়ার মমিন চৌধুরীর হাতে সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট তুলে দেন পাঠাগার কর্তৃপক্ষ।
অনুষ্ঠানে সংবর্ধিতজন ইকতিয়ার মমিন চৌধুরী বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে ও একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতিতে সক্রিয় ভুমিকা পালনে গর্ববোধ করি। তিনি পাঠাগারের পাঠক আজকের প্রজন্মকে আরও বেশি করে বই পড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বাধীন দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিজেদের গড়ে তুলতে বই পড়ার বিকল্প নেই। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজের অংশগ্রহণের অনুভুতি তুলে ধরে প্রত্যেকেই দেশের ইতিহাস বিশেষ করে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অধ্যয়নের পরামর্শ দেন।
উভয় অনুষ্ঠানে বক্তরা বলেন, ১৯৭১ সালের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ নামক লাল সবুজের পতাকা ও মানচিত্র পেয়েছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকতিয়ার মমিন চৌধুরী সিরাজগঞ্জের কৃতী সন্তান। এমন একজন কথাসাহিত্যিক, বীরমুক্তিযোদ্ধাকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পদকে সম্মাণিত করায় জেলার মুক্তিযোদ্ধারা গর্বিত।