চৌহালীবেলকুচিসিরাজগঞ্জ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সিরাজগঞ্জ-০৫ প্রার্থী ০৬, নৌকার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী

ইদ্রিস আলী, চৌহালী প্রতিনিধি:  নির্বাচনী এলাকা সিরাজগঞ্জ-৫। আসনটি সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলা নিয়ে গঠিত। স্বাধীনতার পর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত চৌহালী ও বেলকুচি পৃথক নির্বাচনী আসন ছিলো। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলাকে একত্রিত করে সিরাজগঞ্জ-৫ আসন হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

এই আসনে আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-৫ আসন (বেলকুচি ও চৌহালী) আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করছেন বর্তমান এমপি আব্দুল মমিন মন্ডল, জাতীয় পার্টি থেকে ফজলুল হক, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের এডভোকেট নাজমুল হক, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট (বিএনএম) থেকে আব্দুল হাকিম। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও আরেক জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চৌহালী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মামুন।

ছয়জন প্রার্থীর মধ্যে নৌকা প্রতিক নিয়ে মমিন মন্ডল, ঈগল প্রতিক নিয়ে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ও কাঁচি প্রতিক নিয়ে মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মামুন দিনরাত মাঠে থেকে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।  তবে মাঠে নেই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা), জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) ও বিএনএম (নোঙ্গর) এর প্রার্থীরা। এ তিন প্রার্থীর কোনো প্রচারণা বা গণসংযোগ চোখে পরছে না বলে জানান ভোটাররা।

এর আসনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে নৌকা খুব স্বাচ্ছন্দে জিতলেও এবার ত্রিমুখী লড়াই হবে, এমনটাই মনে করছে স্থানীয় ভোটাররা। নৌকার প্রার্থী আব্দুল মমিন মন্ডল এর সাথে আছে উপজেলা আ.লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ঈগল প্রতিকের প্রার্থী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস এর সাথে রয়েছেন তার অনুসারী, পদধারী ও স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী বদবঞ্চিত নেতারা। নির্বাচনে তিনি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে স্থানীয় অনেকেই মনে করছেন।

এদিকে নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় বাইরের দলগুলোর স্থানীয় কর্মী, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে সাথে নিয়ে অনেকটাই ভালো অবস্থানে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কাঁচি প্রতিকের আব্দুল্লাহ আল মামুন। তবে স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীই নির্ভর করছেন দলমত নির্বিশেষে সকলের ভোটের ওপর এমনটাই ফুটে উঠেছে তাদের প্রচারণায়।

আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রতীকের বর্তমান এমপি, শিল্পপতি মমিন মন্ডলের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দিতার সম্ভাবনা রয়েছে আওয়ামী লীগের আরেক নেতা, স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফ বিশ^াস। এছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর্যায়ে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব) আব্দুল মান্নান।

এবিষয়ে চৌহালী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহিম রেজা বলেন আমাদের বর্তমান এমপি মমিন মন্ডল এ আসনে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন, বিধায়, জননেত্রী শেখ হাসিনা আবারও তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে মানুষ তাকেই ভোট দেবে।

অন্যদিকে চৌহালী উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন- এ আসনে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস এর বিকল্প নাই, তিনি সাংগঠনিক নেতা। তিনি এমপি হলে এ আসনের উন্নয়ন হবে, যোগ্য ব্যক্তি যোগ্য পদ পাবে।

বেলকুচি উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন কিবরিয়া বলেন- আমাদের দল নির্বাচনে আসেনি কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মামুন সাহেবকে বেলকুচি-চৌহালী ও এনায়েতপুরের মানুষ চাচ্ছে তাই তিনি নির্বাচন করছেন এবং আমরা তাকে নিয়ে শতভাগ আশাবাদী। উল্লেখ্য, এ আসনে স্বাধীনতার পর ভাষা সৈনিক ও বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রীসভার প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মোমিন তালুকদার ১৯৭৩ সালে এমপি নির্বাচিত হন,  ১৯৭৯ সালে এ আসন থেকে মুসলিম লীগের এম এ মতিন, ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি মনোনীত মফিজউদ্দিন তালুকদার ও ১৯৮৮ সালে একই দলের অ্যাড শহিদুল ইসলাম দুলাল, ১৯৯১ সালে বিএনপির শহিদুল্লাহ খান, ৯৬ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির শহিদুল্লাহ খান, ২০০১ সালে বিএনপির বিচারপতি মোজাম্মেল হক, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আব্দুল লতিফ বিশ^াস, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আব্দুল মজিদ মন্ডল, ২০১৮ সালের নির্বাচনে মমিন মন্ডল  এবং তার মৃত্যর পর ২০১৮ সালের নির্বাচনে তার ছেলে আব্দুল মমিন মন্ডল আওয়ামী মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button