সিরাজগঞ্জ

১১৫ মুক্তিযোদ্ধার শিক্ষায়তন ভিক্টোরিয়া হাইস্কুল

Eye Hospital Rajshahi

মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার : সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যের শিক্ষায়তন ভিক্টোরিয়া হাইস্কুল। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় এ বিদ্যালয় গড়ে তুলেছেন বহু ভাষাবিদ গোলাম মাকসুদ হিলালী, অধ্যক্ষ শরফুদ্দিন, মাহবুব এর মত মেধাবীদের। অন্যদিকে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশ জাতির স্বার্থে পরাধীন ভারতে শিক্ষার সংকটে, পাকিস্তানী প্রায় ওপনেবেশিক শাসন শোষনের বিরুদ্ধে ভাষা আন্দোলন, আইয়ুবী স্বৈরশাসনের প্রতিবাদে, ৬ দফ ও ১১ দফা আন্দোলনে আমির ভুলু, ইসমাইল হোসেন, সোরহাব আলী, গোলাম কিবরিয়াদের মত সংগ্রামী ছাত্রনেতাকে লালন করেছেন। এই শিক্ষালয়ের ১১৫ জন শিক্ষার্থী বাঙালি জাতির  হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ ও গুরুত্বপূর্ন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে  জীবন বাজী রেখে ইসলামের বরকন্দাজ নেশাগ্রস্থ ইয়াহিয়া-ভুট্টো চক্রের লেলিয়ে দেওয়া হিংস্র পাকি বাহিনীর বিবুদ্ধে যুদ্ধ করে লাল সবুজের পতাকাকে নীল আকাশে উড়িয়ে দিয়ে স্বাধীনতা ও বিজয়ের বার্তা  তুলে ধরেছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন পৃথিবীর বুকে একমাত্র বাংলা ভাষাভাষি জনগনের স্বাধীন রাষ্ট্রভৃমি বাংলাদেশকে।

গতকাল বুধবার, ২৬ এপ্রিল সকালে ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা প্রকাশ এর উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। প্রাথমিকভাবে সম্ভাব্য ১১৫ জনের তালিকা প্রকাশ করার অনুষ্ঠান করা হয় এবং পরবর্তীতে বাকিদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহনকারী সকল শহীদ বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় ১ মিনিট নীরবতা পালন করে দোয়া করা হয়।

এসময় তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের পর দেশকে স্বাধীন করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধবীর বাঙালিরা যে যেভাবে পেরেছেন স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে যুদ্ধের বীরত্ব গাঁথা। দেশ স্বাধীনের ৫২ বছর পর এবার সেইসব বীরমুক্তিযোদ্ধাদের কন্ঠে বীরত্বগাঁথা সরকারি ভাবে সংরক্ষণের কার্যক্রম শুরু করছে এ সরকার। প্রথম পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৮০ হাজার বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকার ভিত্তিক তথ্য চিত্র সংরক্ষণ করছে। এপ্রকল্পের আওতায় স্বাধীনতা বিভিন্ন সেক্টরে সংগঠিত সন্মুখ যুদ্ধ সহ গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলীর ১৬ টি ডকুমেন্টারি নির্মাণ এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে ও ‘ই-আর্কাইভ স্থাপন করবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আলহাজ্ব কে.এম. হোসেন আলী হাসান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, সময়ের স্রোতে একে একে হারিয়ে যাচ্ছেন বীরমুক্তিযোদ্ধারা। তরুণ প্রজন্মদেরকে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা তুলে ধরা গেলে সেটি অত্যন্ত ইতিবাচক। এতে করে বীরত্বগাঁথার পাশাপাশি পাকিস্তানি বাহিনী ও দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলসামসদের অত্যাচার – নির্যাতনের কথা জানতে পারবে। খুব দ্রুত ‘ বীরের কন্ঠে সংরক্ষণের কার্যক্রম শুরু করা দরকার।

বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. লিয়াকত আলী খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সন্মানিত অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্যে রাখেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা গাজী ইসহাক আলী তালুকদার, বীরমুক্তিযোদ্ধা গাজী ফজলুল মতিন মুক্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সোরহাব আলী, বীরমুক্তিযোদ্ধা ফিরোজ ভূইয়া, বীরমুক্তিযোদ্ধা জগলুল চৌধুরী, বীরমুক্তিযোদ্ধা জহুরুল ইসলামসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাগণ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সিরাজগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র (১) মো. নুরুল হক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে রাখেন, ভিক্টোরিয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সদস্য সচিব মো. সাজেদুল ইসলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button