দেশর ঐতিহ্যবাহী বৃহত্তম জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি (নাটাব) এর আয়োজনে সিরাজগঞ্জে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
গত মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, সকালে সিরাজগঞ্জ নর্থবেঙ্গল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর হল রুমে দেশে যক্ষা রোগ বিষয়ে সার্বিক পরিস্থিতি, নিরোধ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের করনীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিরাজগঞ্জ বক্ষ্যব্যধি হাসপাতালের সিনিয়র সার্জন ডাক্তার এবিএম ফারহান ইমতিয়াজ।
নাটাব সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির আলম রতন এর সভাপতিত্বে এবং নাটাব সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার কমিউনিকেশন অফিসার বিচিত্র চন্দ্র দাস এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রিয়াজুল ইসলাম। এসময় নাটাব সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার ফিল্ড লেভেল অফিসার মো. কামরুল ইসলামসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধি,বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, একনাগাড়ে দুই সপ্তাহ বা তার অধিক সময় ধরে কাশি যক্ষ্মার প্রধান লক্ষন। বাংলাদেশকে যক্ষ্মা মুক্ত করা এবং দেশ থেকে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা,মৃত্যুর হার ও সংক্রমণ এমন পর্যায়ে নামিয়ে নিয়ে আসা যেন দেশে যক্ষা জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসাবে বিদ্যমান না থাকে। যক্ষ্মা রোগের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যক্ষ্মা একটি জীবাণুঘটিত সংক্রামক রোগ এক নাগাড়ে দুই সপ্তাহ বা তার অধিক সময় ধরে কাশি থাকলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। রোগ শনাক্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে নিয়মিত, সঠিক মাত্রায় ও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঔষুধ সেবনের মাধ্যমে যক্ষ্মা সম্পূর্ণ ভালো হয়। হাঁচি, কাশি দেওয়ার সময় রুমাল ব্যবহার করতে হবে। পরিবারে একজন যক্ষ্মা রোগী থাকলে পরিবারের অন্যদেরও, বিশেষ করে শিশু এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের যদি ১ সপ্তাহ যাবৎ কাশি থাকে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বাংলাদেশের যক্ষ্মা রোগের পরিস্থিতি যক্ষায় সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ৩০ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ৭ম। জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মাধ্যমে যক্ষ্মা রোগী সনাক্ত হয়েছে ২ লাখ ৯২ হাজার ৯ শত ৪২ জন। প্রতি লাখে নতুন যক্ষ্মারোগী প্রতিবছর ২শত ২১জন। প্রতি বছর যক্ষার কারণে মারা যায় প্রায় ৩৮ হাজারের বেমি। সনাক্তকৃত যক্ষ্মা রোগীর মধ্যে ঔষধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগীর হার: নতুন রোগীদের মধ্যে : ০.৭% পূর্বে চিকিৎসাপ্রাপ্ত রোগীদের মধ্যে : ১১% বাংলাদেশে যক্ষ্মার চিকিৎসা সাফল্যের হার ৯৪%। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ন্যাশনাল টিউবারকুলোসিস গাইড লাইন এন্ড অপারেশনাল ম্যানুযাল (ষষ্ঠ মুদ্রণ), ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গ্লোবাল টিবি রিপোর্ট ২০২০ তথ্য। বিনামূল্যে যক্ষ্মার পরীক্ষা ও যক্ষ্মারোগের চিকিৎসা প্রাপ্তিস্থান, বাংলাদেশের সকল উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সকল বক্ষব্যাধি ক্লিনিক এবং বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল, সরকারী ও বেসরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্র সমূহ (সিটি কর্পোরেশন ), সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, বিভিন্ন ফ্যাক্টরি, ইপিজেড, বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ, কারাগার সমূহ, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, এনজিও ক্লিনিক, কমিউনিটি ক্লিনিক সমূহে বিনামূল্যে যক্ষ্মার পরীক্ষা ও যক্ষ্মারোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।