কাজীপুর প্রতিনিধি: গত রোববার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ছেলেকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়ে নিখোঁজ হন বাবা রিপন তালুকদার (৪৪) ও ছেলে আশিক বাবু (১৩)। ঘটনার পরদিন সোমবার (১ মে) বিকেলে বাবা ও তার পরদিন মঙ্গলবার (২ মে) সকালে ছেলের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার হয় যমুনা থেকে। সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার চরগিরিশ ইউনিয়নের দূর্গম চরাঞ্চলের বারজান এলাকা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে কাজীপুর থানা পুলিশ।
রিপন তালুকদার উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল চরগিরিশ ইউনিয়নের সিন্দুরআটা গ্রামের মৃত শহিদ তালুকদারের ছেলে। তিনি চরগিরিশ ইউনিয়নের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ছিলেন। আশিক বাবু তারই ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি চরগিরিশ ইউনিয়নের সিন্দুরআটা থেকে নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের ডিগ্রিদোরতা গ্রামে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে ছেলে আশিককে সাথে নিয়ে বের হন রিপন তালুকদার। এরপর তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা যমুনা নদীর বারজান এলাকায় জাল ফেলে খোঁজাখুঁজি করেও কোন সন্ধান পাননি।
সোমবার সন্ধ্যায় বারজান এলাকায় যমুনার তীরে রিপন তালুকদারের মরদেহ ভেসে উঠে। তারপরদিন মঙ্গলবার সকালে একই জায়গায় ছেলে আশিকের মরদেহ ভেসে উঠে। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
নিখোঁজের ঘটনায় সোমবার দুপুরেই রিপনের পরিবার থেকে কাজীপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলেও জানা যায়।
জানা গেছে, এক বছর আগে রিপন মেম্বরের শ্বশুর চরাঞ্চলের একটি ভুট্টা খেতে হত্যা হন । বাবা হত্যার ঘটনায় বাদী হয়ে কাজীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন মেয়ে আনজুমান (রিপন তালুকদারের স্ত্রী)। রিপন তালুকদার নিজেই এ মামলায় দৌড়োদৌড়ি করছিলেন।
চরগিরিশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম জিয়াউল হক বলেন, এটা একটা পরিকল্পিত হত্যা হতে পারে। একবছর আগে রিপন তালুকদারের (রিপন মেম্বর) শ্বশুরকে ভুট্টা খেতে পুড়িয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই মামলায় রিপন মেম্বর অনেক ছোটাছুটি করেছে। মামলার বাদীর পরিবারকে শেষ করতে এমন হত্যা হতে পারে।
এ ব্যাপারে কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল কুমার দত্তের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ করেননি। তবে হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তায় জানিয়েছেন তিনি চরে আছেন। সেখানে নেটওয়ার্কের ব্যাপক সমস্যা।