নিজস্ব প্রতিবেদক: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শিশু-কিশোরদের মোবাইল ফোনের প্রতি ঝোক বেড়েছে। বিশেষ করে, উঠতি বয়সী ছেলেরা স্মার্টফোনে আসক্ত হয়ে পড়ছে। পারিবারিক অসচেতনতার কারণেই অপরিণত বয়সের ছেলেরা অনায়াসেই মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাধাইনগর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত কাঞ্চনেশ্বর গ্রামের একটি বাড়ির উঠানে বসে বিকেলে চারজন কিশোর ছেলে মোবাইল ফোনে গেম খেলছে। দু‘জনের মোবাইল ফোন নেই। কিন্তু তারাও বন্ধুদের মোবাইলের দিকে গভীর মনযোগে তাকিয়ে রয়েছে। মাথা তুলে দেখেওনা কে কী বলছেন! গেম খেলছে তো খেলছেই। তারা সবাই মাধাইনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়া লেখা করে।
আরিফুল ইসলাম ও আব্দুর রহিম নামে দুইজন ছাত্র বলে, খেলাধূলার প্রচলন প্রায় উঠেই গেছে। মোবাইল ফোনে গেম খেলেই তাদের সময় কাটে ।
তাড়াশ বাসস্ট্যান্ডের শুকুমার নামের একজন ওষুধ বিক্রেতা বলেন, তার ছেলে নিলয় কুমার এ বছর তাড়াশ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ছে। কিন্তু সে ৩য় শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ব্যবহার করে বিভিন্ন গেম খেলায় পুরো আসক্ত হয়ে পড়ে। মোবাইলে এমবি তুলে না দিলে চিৎকার করত। পৌর এলাকার ঘোষ পাড়াতে আরও ছয় থেকে সাতজন ছেলে প্রায় সময় মোবাইল ফোনে গেম খেলে। মূলত ওদের সাথে মিশে তার ছেলেও মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছিল। বহু চেষ্টা করে তাকে কিছুটা ফেরানো হয়েছে।
জানা গেছে, শিশুদের শান্ত রাখা ও ঝামেলাহীনভাবে খাওয়ানোর জন্যও সন্তানদের হাতে মোবাইল তুলে দেন অনেক বাবা-মা। শুধু শহর এলাকাতে নয়, বরং গ্রাম এলাকাতেই অতিমাত্রায় মোবাইল ব্যবহার করছেন শিশু-কিশোররা।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে শিশু-কিশোরদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। চোখে সমস্যা হয়। অনিদ্রা ও ক্ষুধা মন্দা দেখা দিতে পারে। মোবাইল ফোন ব্যবহারের সমস্যা দীর্ঘমেয়াদী হলে ভবিষ্যতে আশঙ্কার কারণ হয়ে উঠবে।