তাড়াশ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর শহরের আসান বাড়ী মহল্লার মৃত জেল হক প্রামানিকের মেয়ে জাকিয়া সুলতানা রুপাকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার সাত বছর পর প্রকাশিত হলো আপীলের রায়। এতে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত চার আসামীকে যাবৎ জীবন সাজার রায় দিয়েছেন আপীল বিভাগ। আর এ রায়ে সন্তোষ্ট নয় রুপার মা হাসনাহেনা ও মামলার বাদী রুপার বড় ভাই হাফিজুর রহমান।
জানা গেছে, ২৭ জানুয়ারী হাই কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও তৌফিক ইমামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন। এতে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত বাসটির হেলপার শামীম (২৬), জাহাঙ্গীর (১৯) এর সাজা কমিয়ে যাবৎজীবন কারাদন্ড দেয়া হয়। আরেক মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী আকরাম কারাগারে মৃত্যুবরণ করায় তাকে অব্যহতি দেওয়া হয়। অপর দিকে চালক হাবিবুর (৪৫) কে সাত বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। ছোঁয়া পরিবহন নামক বাসটি ক্ষতিপূরণ হিসেবে রুপা পরিবারের স্থলে মালিক পক্ষের তত্বাবধানে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ছোঁয়া পরিবহন নামক একটি বাসে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রুপা খাতুনকে চলন্ত বাসে পরিবহন শ্রমিকরা ধর্ষণ করে। পরে তাকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পুলিশ ওই রাতেই তার লাশ উদ্ধার করে। পরে রুপার বড় ভাই হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারিক আদালতে মামলা দায়ের করেন। ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী ওই চার আসামীর বিরুদ্ধে বিচারক আবুল মনসুর মিয়া মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষনা করেন। ওই বছরই ১৮ ফেব্রুয়ারী সকল আসামী উচ্চ আদালতে আপীল করেন। আপীলের দীর্ঘ সাত বছর পর এ রায় ঘোষিত হলো।
এ ব্যাপারে রুপার মা হাসনাহেনা জানান, এ রায়ে তিনি সন্তোষ্ট নন। তাঁর মেয়ের উপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে যারা হত্যা করেছে তাদের যাবৎ জীবন নয়, মৃত্যুদন্ডই দেখতে চান তিনি।
মামলার বাদী রুপার বড় ভাই হাফিজুর রহমান জানান, তাঁর বোনের হত্যাকারীদের মৃত্যুদন্ডের পরিবর্তে যাবৎজীবন সাজায় সন্তোষ্ট নন তিনি। আসামীদের নিম্ন আদালতের দেয়া ফাঁসির রায় বহাল রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন তিনি।
এ বিষয়ে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি ডেপুটি এ্যার্টোনি জেনারেল এম মাসুদ রানার সাথে কথা বলে জানা যায়, এ্যার্টোনি জেনারেলে সাথে আলোচনা করে বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখতে আপীল করবেন তারা।