ইদ্রিস আলী, চৌহালী প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে শীতের প্রকোপে হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত নবজাতক, শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, চৌহালী সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে কয়েকগুণ। এদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ শুধু বহির্বিভাগে নয় শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে প্রায় দ্বি-গুন।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড ও বৃদ্ধরা বর্তমানে সেখানে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
খাষশাহজানি এলাকার মরিয়ম তার দেড় বছর বয়সি মেয়ে হাফসাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। কথা হলে তিনি জানান, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর উঠছে ছেলের। ডাক্তার দেখালাম। বর্তমান ছেলে কিছুটা সুস্থ হলেও পুরোপুরি সেরে উঠতে সময় লাগবে বলে ডাক্তার জানিয়েছেন।
ভুমুরিয়া গ্রামের জেসমিন আক্তার তার ছেলে দুই বছরের জুনায়েদকে ঠান্ডাজনিত রোগের কারণে ডাক্তারের কাছে এসেছেন।
তিনি বলেন, “গত চার-পাঁচ দিন থেকে ঠান্ডার প্রকোপ অনেক বেড়েছে। ঠান্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা নিতে ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। কিন্তু হাসপাতালে রোগী চাপ বেশি থাকায় ছেলের জন্য ডাক্তার দেখাতে কষ্ট হচ্ছে।
খাষকাউলিয়া গ্রামের মারিয়া খাতুন ও মরিয়ম খাতুন তার ৮মাস ও ৩ বছরের হোসাইন ও হালিমা নিয়ে ডাক্তারের কাছে এসেছেন। তিনি বলেন, ২-৩ দিন ধরে ঠান্ডা জ্বর, পাতলা পায়খানা। এখানে ইনডোর না থাকায় সমস্যা পরেছি।
উপজেলা হাসপাতালের উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আনিসুর রহমান মামুন জানান, গত এক সপ্তাহে যেসব রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছে তাদের অধিকাংশই সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। গত মাসে নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়া রোগী ছিলো – ৩২২ জন। সেখানে গত ১৫ দিনে রোগী এসেছে ২০৫ জন।
মেডিকেল অফিসার আরএমও জেরিন সিকদার বলেন, শীত বেড়ে যাওয়ায় নবজাতক, শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে নানা ধরনের রোগ দেখা দিয়েছে। আগের চেয়ে আউটডোরে রোগীর চাপ বাড়ছে। এদের মধ্যে অধিকাংশ রোগী শিশু ও বৃদ্ধ।
শীতের কারণে শিশুদের সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, নিউমোনিয়া, রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া দেখা দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
সবাইকে পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, “এই সময় নবজাতক ও শিশুদের মায়ের কাছাকাছি রাখতে হবে। ঘরের মেঝে স্যাঁতসেঁতে অবস্থায় রাখা যাবে না। শীতে তাদের কুসুম গরম পানি খাওয়াতে হবে।
“সুষম খাবারের পাশাপাশি তাদের ভিটামিন- ‘সিথ সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। শিশুর ডায়রিয়া হলে ওরস্যালাইন খাওয়াতে হবে, স্যালাইনের পানি গরম করার পর ঠান্ডা করে খাওয়াতে হবে। শিশুদের ধুলোবালি থেকে দূরে রাখতে হবে। এ ছাড়া শীতে শিশুদের বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন; এতে তাদের নানা ধরনের রোগ-ব্যাধি থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে জানান এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।