চৌহালীসিরাজগঞ্জ

আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়েছে লাঙ্গল-জোয়াল

ইদ্রিস আলী, চৌহালী প্রতিনিধি: কৃষি প্রধান বাংলাদেশে এক সময় লাঙ্গল-জোয়াল ও গরু ছাড়া কৃষি জমি প্রস্তুতের কথা চিন্তাই করা যেত না। কিন্তু কালের পরিক্রমায় হারিয়ে গেলেও বাংলার এ অতীত ঐতিহ্য সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার গ্রামগুলোতে  হঠাৎ করেই চোখে পরে ৷

বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে গরু, লাঙল ও জোয়াল। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হালচাষের পরিবর্তে এখন ট্রাক্টর অথবা পাওয়ার টিলার দিয়ে অল্প সময়ে জমি চাষ করা হয়। এক সময় দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে কৃষক গরু, মহিষ পালন করত হালচাষ করার জন্য। অনেকে গবাদিপশু দিয়ে হালচাষকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে ছিলেন। আবার অনেকে ধান,গম, ভুট্টা, সরিষা, আলু প্রভৃতি চাষের জন্য ব্যবহার করতেন। নিজের সামান্য জমির পাশাপাশি অন্যের জমিতে হালচাষ করে তাদের সংসারের ব্যয়ভার বহন করত। আবার অনেকে পালা করে হাল চাষ করতো ৷ হালের গরু দিয়ে দরিদ্র মানুষ জমি চাষ করে ফিরে পেত তাদের পরিবারের সচ্ছলতা।

তেমন এক চিত্র দেখা গেল চৌহালী উপজেলার কোদালিয়া ও খাষকাউলিয়া গ্রামে। সরেজমিন দেখা যায় কোদালিয়া গ্রামের মৃত জয়চানের ছেলে মজিবর রহমান ও কাজিমুদ্দিনের ছেলে ফজল হক বলেন প্রতি বিঘা জমি ৫-৬শ টাকা হারে তাঁর দুটি গরুর হাল ও লাঙল দিয়ে চাষ করছেন।

চাষী মজিবরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, পূর্ব পুরুষের হাত ধরে প্রায় ২০-২৫ বছর আগে থেকেই এই কাজের সাথে তিনি জড়িত। প্রতি বছর চাষের মৌসুমে প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার মত আয় হয়। উপার্জিত এই অর্থ দিয়ে গরুর খাদ্য ও সংসার খরচ হয়। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রের কারনে গরুর হালের চাপ কমে গেছে। এতে সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মাজেদুর রহমান বলেন, গরু-মহিষ, লাঙল ও জোয়াল ছিলো কৃষকের আর্শিবাদ স্বরূপ। গরু-মহিষ, লাঙ্গল ও জোয়াল ছিলো আমাদের ঐতিহ্য ও পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি কৃষি চাষ পদ্ধতি। কিন্তু বর্তমান সময়ে কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ প্রযুক্তির ব্যবহারে সরকার ৫০% উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করছে। এতে কৃষিতে উৎপাদন খরচ কমবে ও কৃষকরা লাভবান হবে। ফলে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহারে কৃষকরা বেশী আগ্রহী হচ্ছে তবে লাঙল-গরুর হাল চাষ এখনও জনপ্রিয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button