শাহজাদপুরসিরাজগঞ্জ

এনডিপি’র উদ্যোগে প্রকল্পের শিখন বিনিময় শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

গত ২০ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার এনডিপি-এসইপি প্রকল্পের আওতায় পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন ( পিকেএসএফ)  এর আর্থিক সহযোগিতায় এবং ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এনডিপি)র  সার্বিক সহযোগিতায়  “বাংলাদেশে যমুনা নদী বাহিত উত্তরাঞ্চলের ডেইরি বিজনেজ ক্লাস্টারকে নিরাপদ দুগ্ধ ও দুগ্ধজাতপণ্য উৎপাদনের জন্য পরিবেশ উন্নয়নের অনুশীলণ প্রচার করা” উপপ্রকল্পের উদ্যোগে  শিক্ষণ বিনিময় শীর্ষক কর্মশালা শাহজাদপুর উপজেলার পিপিডি ট্রেনিং সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন  শাহজাদপুর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মো. মামুনুর রশীদ লিয়াকত। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জোনাল ম্যানেজার মো. আমিনুল ইসলাম। 

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন  বিএলআরআই এর উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবু ইউসুফ খান,  শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহফুজুর রহমান, মিল্কভিটার সিডিটি ডা. মো. বাবুল আক্তার, ফায়ার সার্ভিস এর টিম লিডার  মো. আসাদুজ্জামান ও  রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয় বাংলাদেশ এর প্রভাষকলায়লা ফেরদৌস। কর্মশালায় প্রকল্পের ম্যানেজার আব্দুল মালেক আকন্দ  প্রকল্পের অগ্রগতি সম্বন্ধে জানান, প্রকল্পের দুধ উৎপাদনকারী  খামারীদের নিরাপদ দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান, বিনা মূল্যে গবাদী প্রাণির কৃমিনাশক ও টিকা প্রয়োগ, ঘাস চাষ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, নিয়মিত পরিবেশ ক্লাব মিটিং, উন্নত গোয়াল ঘর তৈরির জন্য অনুদান প্রদান এবং দুধ দোহনের আগে ও পরে করনীয় বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা হয়।

এছাড়া নিরাপদ দুধ সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন স্থানে ভিলেজ মিল্ক কালেকশন সেন্টার স্থাপন এবং দুধ সংগ্রহের জন্য দুধ সংগ্রহকারীদের গামবুট, এপ্রোন, হেয়ার নেট, মাক্স এবং হ্যান্ড গ্লোভস বিতরণ করা হয়।

দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনকারী উদ্যোক্তাদের নিরাপদ দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনে ও ব্যবসা সম্প্রসারনের জন্য বিভিন্ন  ধরনের কর্মশালার ( বিসনেজ ওয়ার্কসপ, ডাইভার্সিভাইড প্রডাক্ট ডেভেলপমেন্ট , এনভায়রনমেন্ট ওয়ার্কসপ ) আয়োজন করা হয় । এছাড়াও পণ্যের মান উন্নয়ন , সরকারীভাবে পন্য পরীক্ষার মাধ্যমে বিএসটিআই করণ,  মোড়ক উন্নয়ন এবং বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে (ই কমার্স, ওয়েভ সাইড ডেভেলপমেন্ট ) ব্যবসা বিস্তৃতির কাজ করা হয়েছে।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, পূর্বে রেশমবাড়ী গ্রামের রাস্তায়  গোবরের কারণে চলাচল করা কষ্ট হতো, বর্তমানে এসইপি ডেইরী ফার্ম প্রকল্পের আওতায় জনসচেতনতা বাড়ায় এখন রাস্তাটা পরিষ্কার থাকে। ভবিষতে তারা যদি গোবর সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারে, তাহলে অমূল্য গোবর আরো বেশী দামে বিক্রি করতে পারলে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হবে।

বিশেষ অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোাঃ আব্দুল গফুর বলেন ,  যারা খামার বা দুগ্ধজাতপণ্য উৎপাদন করে ব্যবসা করছেন ,তাদের  পরিবেশ বিষয়ক ছাড়পত্র অবশ্যই দরকার হবে , সরকার এ ব্যাপারটি গূরুত্বের সঙ্গে দেখছে। পরিবেশ ছাড়পত্র পেতে কি কি কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়ে এবং প্রক্রিয়ার ধাপ গুলো  সম্বন্ধে আলোচনা করেন ।  দ্রুত পরিবেশ বিষয়ক ছাড়পত্র গ্রহণের জন্য পরামর্শ দেন এবং পরিদর্শন সাপেক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে আশ^াস প্রদান করেন।

বিশেষ অতিথি  বিএলআরআই এর উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবু ইউসুফ খান বলেন, সাইলেজ একটি অতি প্রয়োজনীয় জিনিস। এনডিপি- এসইপি ডেইরী প্রকল্প সাইলেজ নিয়ে কাজ করছে । এতে খামারের খাদ্য খরচ ৫০% কমবে এবং খামারী আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।

মিল্কভিটার ম্যানেজার ডাঃ বাবুল আক্তার উপস্থিত অতিথিদের বলেন এনডিপি- এসইপি ডেইরী প্রকল্পের একটি বড় সাফল্য, তারা প্রচুর ট্রেনিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে সদস্যদের প্রশিক্ষিত করতে পেরেছেন। সদস্যরা এখন প্রতি ৩ মাস পরপর গরুকে ওজন হিসাবে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াচ্ছেন ফলে রিপিট ব্রিডিং এর সমস্যা ৩০% কমে গেছে। নিয়মিত গবাদী প্রাণিকে টিকা করানোর ফলে গরুর মৃত্যুহার ৬০% কমে গেছে।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের লাইভস্টক অফিসার ডা. মো. তৌফিকুল হক, পরিবেশ কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান, টেকনিক্যাল অফিসার ডা. মো. মুকতাদির করিম খানঁ, মার্কেটিং অফিসার তাহসীন মাহমুদ এবং ফাইন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট অফিসার মো. আজাহার আলী ।

উল্লেখ্য, এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য -পরিবেশ বান্ধব আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহনের মাধ্যমে  প্রতিযোগিতা মূলক ডেইরী  উদ্যোক্তাদের  শক্তিশালী করা এবং দুগ্ধজাত পণ্য  উচ্চ মূল্যের বাজারে প্রবেশের সহযোগিতা করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button