কাজীপুরসিরাজগঞ্জ

শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে হালচাষ, লাগানো হয়েছে গাছ

আশরাফুল আলম, কাজীপুর প্রতিনিধি: শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম! নামটির বিশালতা থাকলেও বাস্তবে তার কোনই মিল নেই। প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের শেষের দিকে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এখন পর্যন্ত কোন খেলাই গড়ায় নি। উপরন্তু ওই স্টেডিয়ামে করা হয়েছে হালচাষ, লাগানো হয়েছে গাছের চারা। স্টেডিয়ামটির অবস্থান সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার সোনামুখীতে।

গত রোববার বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সুবিশাল স্টেডিয়ামটির দক্ষিণপাশে একটি পাকাঘর ও শৌচাগার রয়েছে। তারপাশেই রাখা হয়েছে খড়ি-লাকড়ি। দক্ষিণ দিকে করাতকলের গাছের গুল রাখা হয়েছে। মাঠের এক অংশে বসেছে হাট। মাঠের দুপাশে কিছু ইট-সিমেন্টের তৈরি বেঞ্চ। তার কয়েকটির উপরের পাটনি নেই। আর স্টেডিয়ামের পুরো মাঠে ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করা হয়েছে। মাঠের তিন-চতুর্থাংশে গাছ লাগানো হয়েছে। বোঝার উপায় নেই যে এটি একটি মিনি স্টেডিয়াম।

এসময় কথা হয় স্টেডিয়ামে হালচাষ ও গাছ লাগানো কয়েকজনের সাথে। তারা বলেন, এই জমিগুলো তাদের ব্যক্তি মালিকানা। কিন্তু স্টেডিয়াম করার জন্য জায়গাটি নির্ণয় হলে স্থানীয় নেতাকর্মির আশ্বাসে আমাদের জমিগুলো স্টেডিয়ামে দিয়ে দেই। সেখানে শর্ত ছিল ন্যায্য মূল্য দেয়ার। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোন কিছুই পাননি। উপায় না পেয়ে উচ্চ আদালতে মামলা করেন জমির মালিকরা। তারপর গত শুক্রবার দুপুরে হালচাষ করেছি।

আব্দুল বারিক নামের এক জমির মালিক বলেন, এখানে আমাদের ভাগি শরীক মিলে ৬৬শতাংশ জমি আছে। ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় তো মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের নিয়ম নেই। নেতারা বলেছিল টাকা দেবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা এক পয়সাও পাইনি। আদালতে মামলা করে গাছ লাগিয়েছি।

লোকমান আলী শেখ নামের আরেকজন বলেন, আমরা বাঁধা দিছিলাম আমাগোরে জমিতে মাটি কাটতে। কিন্তু উজ্জ্বল নেতা আর শাহজাহান চেয়ারম্যান জোর করে কাইটছে। তারা কইছে আমাগোরে টাকা দিবো। আমার ৬৭ শতক জমি তারা বেদখল দিয়া মাঠ বানাইছে। আমার থাইকা ফাঁকি দিয়া জাগা নিছে।

৮৭ শতাংশ জমির মালিক শেফালী জানান, তার জমিগুলো স্টেডিয়ামের জন্য যে নেয়া হয়েছে তিনি নিজেই জানেন না। পরে চেয়ারম্যানরা নাকি টাকা দেয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু তারা আর পরে পাত্তা দেননি। তাই নিজের জমিতে হালচাষ করেছেন তারা।

স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি চেয়ারম্যান শাহজাহান আলীর সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে চাননি।

তবে সাধারণ সম্পাদক শ্রী উজ্জ্বল কুমার ভৌমিক বলেন, ওই জমি গুলো এসএ, ডিএস এ খাস ছিল। কিন্তু আরএস এ এসে রেকর্ড হয়েছে। এসএ, ডিএস ধরলে তারা তো টাকাই পায়না। তবে এলাকার মানুষ হিসেবে তারা যাতে ন্যায্য মূল্য পায় আমরা সহযোগিতা করবো।

কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এবিএম আরিফুল ইসলাম বলেন, এটাতো পুরোনো ইস্যু। অনেক আগের কথা স্টেডিয়াম হয়েছে। আপনারাতো জানেনই। আমার সাক্ষাৎকারটা বাদ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button