কামারখন্দসিরাজগঞ্জ

স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে  গেলেও পাকা হয়নি সড়ক

বাংলাদেশে যোগযোগের ঈর্ষণীয় সাফল্যের পরও সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে উপজেলা থেকে মাত্র ১ কিলোমিটারের মধ্যের গ্রাম কৃষ্ণদিয়ার। প্রায় ২০০ বছরের অধিক পুরোনো গ্রামবাসীর একমাত্র দাবি পূরণ করতে কেউ এগিয়ে আসেনি। গ্রামবাসী স্বাধীনের ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও দেখা পাইনি পাকা সড়কের এবং গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীতকালে ছোট, বড়, নারী, পুরুষ সবাইকে হেঁটে অথবা বাইসাইকেলে আসতে হয় স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, কর্মক্ষেত্রে এবং বাজারে। গ্রামের একপাশে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত ছুটতে হয় উপজেলার প্রধান বিদ্যালয় গুলোতে অথবা শহরে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কামারখন্দ উপজেলাকে পৌরসভা ঘোষণা হলে কৃষ্ণদিয়ার গ্রামটি পৌরসভার মধ্যেই পড়ে। একেবারে উপজেলার সন্নিকটে পরিষদের পিছনেই রয়েছে গ্রামটি। চাইলেই যেকেউ পরিষদের ভবনের ছাদ থেকে গ্রামটিকে দেখতে পাবে। ছবির মতো গ্রামটিতে ১টি মাত্র সড়ক রয়েছে তাও আবার মাটির তৈরি কাঁচা সড়ক। সড়কে রয়েছে অগনিত ধূলোবালি আর এবরে থেবরে উঁচু নিচু গর্ত। যেখান দিয়ে গ্রামের লোকজনকে সারাবছরই চলাফেরা করতে হয় ধূলোবালি অথবা কর্দমাক্ত পা হেঁটে। আসতে হয় উপজেলার বিভিন্ন কাজে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিটি নির্বাচনে জনপ্রতিনিধিগন পাকা সড়ক করে দেওয়ার ওয়াদা করে গেলেও নির্বাচনে জয়লাভ করার পর আর দেখা করেনা। পাকা সড়ক না থাকায় আমাদেরকে গ্রীষ্ম এবং বর্ষাকালে প্রচুর পরিমাণে ভোগান্তি পোহাতে হয়। মনে হয় যেন দেখেও দেখার কেউ নেই। ছেলেমেয়েদের স্কুল, কলেজে যেতে অনেক সময় ধূলোবালি আর কাঁদায় পোষাক নোংরা হয়ে পরেরদিন স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি অসুস্থ রোগী বা ডেলিভারি রোগী কে হাসপাতালে নিতে পাকা সড়ক না থাকায় যেকোনো প্রকারের যানবাহনের দেখা পাওয়া যায় না।

গ্রামের সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়া সাইদুল ইসলাম রাজা বলেন, আমরা একটি পাকা সড়কের জন্য কতবার যে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং মেম্বারের কাছে গিয়েছি তা গুনে শেষ করতে পারবো না। জীবদ্দশায় গ্রামে ১টি পাকা রাস্তা দেখতে চাই । জানিনা দেখতে পারব কি না।

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম শহিদুল্লাহ সবুজ বলেন, উপজেলার নিকটস্থ গ্রাম কৃষ্ণদিয়ার। গ্রামটিতে একটি মাত্র রাস্তা পাকা হয়নি বিষয়টি দুঃখজনক। আমরা ইতিমধ্যে রাস্তাটিকে আইডিভুক্ত করে সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না আইআরডিপি-৩ প্রকল্পে প্রেরণ করেছেন। আশা করছি এক দুই মাসের মধ্যেই একটা টেন্ডার হবে এবং এই সালের মধ্যেই পাকা রাস্তার কার্যক্রম শুরু হবে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলার প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা ইতিমধ্যে পাকা সড়কের তালিকায় কৃষ্ণদিয়ার গ্রামেকে রেখে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। আশা করি সামনে হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button