শাহজাদপুর প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ব্যাবসায়ী রেজাউল করিম শফিক নামে এক ব্যাবসায়ীকে অপহরণ করে অপহরন করে মারপিট করে আহত করা ও মুক্তিপণের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়।
মামলার এজাহারসুত্রে ও অপহরণ হওয়ার পর মারপিটের শিকার হওয়া ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার রুপবাটি ইউনিয়নের ছোট বিন্নাদাইর গ্রামের মাহফুজুর রহমান রঞ্জুর স্ত্রী রুপা খাতুনের সাথে উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের চড়াচিথুলিয়া গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে রেজাউল করিম শফিক এর পার্টনারে ব্যাবসা ছিলো। সেই সুবাধে রুপা খাতুন শফিকের নিকট থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা ধার নেন। কিন্তু পাওনা টাকা পরিশোধ না করেই রুপা হঠাত করে ব্যাবসা বন্ধ করে দেন।
রুপার কাছে টাকা চাইতে গেলেও টাকা না দিয়ে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে থাকে। পরে রেজাউল করিম শফিক দুটি মামলাও করেন রুপার বিরুদ্ধে। মামলা করার পর থেকেই মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। এথেকেই দুজনের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। এর একপর্যায়ে গত বছরের ডিসেম্বরের ৩ তারিখে রেজাউল করিম শফিক ব্যাবসায়ীক কাজে মোটরসাইকেলযোগে পাবনা যাওয়ার পথে রুপার নেতৃত্বে সাথীয়ার আফতান নগড় এলাকার মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে রতন, রনি সহ কয়েকজন মিলে রেজাউল করিম শফিককে মোটরসাইকেল থেকে জোরপুর্বক নামিয়ে চোখ বেঁধে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।
এর পর অজ্ঞাত একটি স্থানে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে একটি নৌকায় তুলে নদীর মাঝখানে নিয়ে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে হাত পাঁ ভেঙে দেয় এবং ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
পরে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ১০ টি সাদা স্ট্যাম্পে জোরপুর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। ডাচ বাংলা ব্যাংকের ডেবিট কার্ড ছিনিয়ে নেয় এবং পরে সেই কার্ড দিয়ে বুথ থেকে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা তুলে নেয়। এর পর আবারো চোখ মুখ বেধে নদীতে নিয়ে যায় এবং ২০ লক্ষ টাকা দাবি করে।
টাকা না দিলে হাত পা বেধে নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেয়। এতে ভয়ে পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করলে পরিবারের লোকজন বিকাশের মাধ্যমে ৮০ হাজার টাকা পাঠায়। পরে আরো টাকা দাবি করলে পরিবারের লোকজন ৮ লাখ টাকা প্রদান করলে ৫ ডিসেম্বর পাবনার আমিনপুর থানার একটি চরে হাত পা বাধা অবস্থায় রেজাউল করিম শফিককে ফেলে রেখে গেলে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।
রেজাউল করিম শফিক আরো জানায়, ওরা আমাকে বেধরক পিটিয়ে হাত পা ভেঙে দিয়েছে, দুই কিলোমিটার রাস্তা আমাকে টেনে হিচরে নিয়ে যাওয়ায় আমার কিডনিতে আঘাত লেগে আমার কিডনি ড্যামেজ হয়েগেছে।
বর্তমানে কিডনি সমস্যা সহ নানা সমস্যায় ভুগছি।
এঘটনায় রুপা খাতুন, রতন, রনি, রেজা নামীয় এবং আরো কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামী করে শাহজাদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এসব আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার। এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাঞ্চন কুমার বলেন, এব্যাপারে ভুক্তভোগী রেজাউল করিম শফিক শাহজাদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।