এনডিপি আরএমটিপি প্রকল্পের উদ্যোগে পলিসি উন্নয়ন ও বিদ্যমান পলিসির প্রয়োগ বিষয়ক মাল্টিষ্টেকহোল্ডার কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। গত ২৬জুন বুধবার সহযোগি সংস্থা ইফাদ ও পিকেএসএফ-র আর্থিক সহযোগিতায় এবং ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এনডিপি) বাস্তবায়িত রুরাল মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ ট্রান্সফরমেশন প্রকল্প (আরএমটিপি)-র উপ-প্রকল্প -‘‘নিরাপদ মাংস ও দুগ্ধজাত পন্যের বাজার উন্নয়ন’’ এর আওতায় জেলা প্রানি সম্পদ অধিদপ্তর এর আয়োজনে পলিসি উন্নয়ন ও বিদ্যমান পলিসির প্রয়োগ বিষয়ক মাল্টিষ্টেকহোল্ডার কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওমর ফারুক এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরএমটিপি প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. মাসুদ মন্ডল প্রকল্প বাস্তবায়িত বিভিন্ন কার্যক্রমের অগ্রগতি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে উল্ল্যেখ করেন এবং চলমান কার্যক্রমের বিভিন্ন অংশ তুলে ধরেন। তিনি সলপ ঘোল এন্ড সাদেক খান দই ঘর উদ্যোক্তা আ. মালেক খান তার উৎপাদিত দেশের ঐতিহ্যবাহী দুগ্ধজাত পণ্য সলপের ঘোল মাঠা জিআই পণ্য হিসাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের বিষয়ে সভার সভাপতি ও জেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা এর সহযোগীতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা-উল্লাপাড়া এর মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। জেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা বলেন, জেলা পর্যাায়ের মিটিং-এ বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে এবং আমাদের ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগীতা প্রদান করা হবে। স্লটার হাউজ উন্নয়নের উদ্যোক্তা মোঃ আফসার আলী জানান, বনিক সমিতির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে যে, স্থানীয় সকল মাংস ব্যবসায়ী একটা নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে উক্ত স্থানে প্রানি জবেহ নিশ্চিত করবে। সেই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার থেকে তারা এখানে নিয়মিত প্রানি জবেহ করছে আজকেও ৪ টা প্রানি এখানে জবেহ করেছে। কেঁচো সারের কেঁচো উৎপাদন উদ্যোক্তা টুকু মুক্তার জানান, তিনি অনলাইন “হ্যালো উদ্যোক্তা বিডি” নামের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে প্রতিদিন তিনি গড়ে ২০-৩০ কেজি কেঁচো বিক্রি করে থাকেন এ মাসে একদিন তিনি সর্বোচ্চ ৮০ কেজি কেঁচো বিক্রি করেছেন এছাড়া আরএমটিপি প্রকল্পের উদ্যোক্তারাও তার কাছ থেকে কেঁচো সংগ্রহ করে থাকে। মিট প্রসেসিং প্লান্ট উন্নয়ন উদ্যোক্তা মাসুদ রানা কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করতে কিছু সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জের বিষয়টি উপস্থাপন করেন। যেভাবে যত্রতত্র গবাদি প্রানি জবেহ করা হচ্ছে এতে করে পরিবেশ দূষনসহ দুর্গেেন্ধ আসপাশের মানুষ নানা রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে বলে তিনি উল্ল্যেখ করেন। উপস্থিত জেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা মহোদয় বলেন, সকল ধরনের মাংস ব্যবসায়ী তার ব্যবসা পরিচালনা করতে হলে অবশ্যই প্রানিসম্পদ অফিস থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। এর ব্যপ্তয় হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি উল্ল্যেখ করেন। তাছাড়া আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, যেমন ২/১ জন সরকারি ভ্যাটেনিয়ারি ডাক্তারের পক্ষে প্রত্যেক হাটে বাজারে প্রতিদিন পরিক্ষা নিরিক্ষা করার পর তাকে পশু জবাইয়ের অনুমতি দেয়া এটা খুবই দূঢ়হ ব্যাপার তবে স্থানীয় এলএসপি দ্বারা প্রানি পরিক্ষা করে জবেহর অনুমতি দিলেও সে ক্ষেত্রে তাদের কোন চার্জ বা অর্থ প্রদানের কোন বিধান নাই। তিনি তার ব্যক্তব্যে উল্ল্যেখ করেন যে, আমাদের প্রথমে এই দুগ্ধ ও মাংশ উৎপাদন যারা করে অর্থ্যাৎ খামারিদের কথা আগে চিন্তা করতে হবে। রেডি ফিডের দাম অত্যাধীক বেড়ে যাওয়ায় তারা গবাদি পালন করে আয়ের চেয়ে তাদেও ব্যয় হচ্ছে বেশী কারন উৎপাদন খরচ বেশী হওয়ায় অনেক খামারি গবাদি পালনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে এই সমস্যা উত্তোরনের জন্য খামারিদের স্থানীয় খাবার যেমন সাইলেজ খাওয়ানোর বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর বিষয়ে সবাইকে পরামর্শ প্রদান করেন।
কর্মশালায় বিভিন্ন কোম্পানী ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ গ্যাপ মাষ্টার ট্রেইনার, এলএসপি, লিড খামারি, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পন্য উৎপাদনকারী উদ্যোক্তা, মাংশ বিক্রেতা, গোয়ালা ইত্যাদী অংশগ্রহনকারী কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন। ভ্যাকসিন কার্যক্রমকে বেগবান ও নিরাপদ করার জন্য ৩ জন এলএসপিকে প্রকল্প অনুদানে ভ্যাকসিন কুল বক্স প্রদান করেন কর্মশালার সভাপতি ও প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওমর ফারুক। তিনি গবাদিপ্রানি উন্নয়নে এলএসপি-গন যে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন তার জন্য তিনি সবার প্রতি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি এনডিপি আরএমটিপি প্রকল্পের পক্ষ থেকে এলএসপিদের কার্যক্রমকে নিরাপদ ও তাদের ব্যবসা উন্নয়নে অপরিসীম অবদান রাখায় এনডিপি-র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।