চৌহালী প্রতিনিধি: প্রত্যেক ওয়ার্ডের কোনো দম্পতির পরিবারে নবজাতকের আগমনের খবর পেলেই যথাসময়ে বাড়িতে পৌঁছে যাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ। সেইসাথে মিষ্টি ,ফুলের তোড়া ও গাছের চারা। তার বাবা-মাকে দিয়ে শিশুটির জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করার বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে।
ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচি শুরু করেছেন সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান।
রোববার (২৯অক্টোবর) বিকালে চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নে বৈন্যা গ্রামে মো, আবুল বাসার এর ঘরে নতুন জন্ম হওয়া নবজাতক শিশু মো. ছাইদুল ইসলাম, বয়স ৭ দিনে জন্ম নিবন্ধন সনদ পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে এ কর্মসূচি শুরু করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান।
এর দুইদিন আগে ওই শিশুটির জন্মের তথ্য পান ইউনিয়নে স্মাট উদ্যোক্তা রাশিদুল ইসলাম।
তাৎক্ষণিক তিনি সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করে ওই শিশুটির জন্ম নিবন্ধন আবেদন সম্পন্ন করেন তার নিজ বাড়িতেই।
এসময় চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান, স্মাট উদ্যোক্তা রাশিদুল ইসলাম ও এলাকার সূধী সমাজ উপস্থিত থেকে নবজাতকের মা-বাবাকে মিষ্টি খাওয়ান, দম্পতির বাড়ির আঙিনায় গাছের চারা রোপন করা হয়। পরে জন্ম সনদ, মিষ্টি বিতরণ ও ফলের গাছ উপহার দেন।
জানা যায়, কোনো শিশুর জন্মের ০-৪৫ দিনের মর্ধ্যে শিশুর জন্ম নিবন্ধন সনদ বিনামূল্য দিচ্ছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধনে সরকারি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু অনেক বাবা-মা তাদের শিশুর জন্ম নিবন্ধনে আগ্রহ তুলনামূলক কম। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রয়োজনে মা-বাবারা সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করিয়ে সনদ নেওয়ার জন্য ছুটাছুটি করেন সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে। ততদিনে শিশুর বয়স পাঁচ-ছয় বছর হয়ে যায়। তখন লুকোচুরি করে প্রকৃত দিনক্ষণে শিশুর জন্ম নিবন্ধন করা হয় না। এমন পরিস্থিতিতে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান তার প্রত্যেক ওয়ার্ড ব্যাপী এ ব্যতিক্রমী কর্মসূচি শুরু করেছেন। তার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা ও প্রশাসন।
চেয়ারম্যান, ইউপি সচিব ও উদ্যোক্তার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের প্রশংসা করে নবজাতক শিশুটির বাবা আবুল বাশার বলেন, ‘আমার সন্তানের আগমনের খবর পেয়ে আমাদের বাড়িতে আসেন উপজেলা নিবাহী অফিসার, ইউপি চেয়ারম্যান, ও স্মাট উদ্যোক্তা। তারপর আমার সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের সনদ করে দিয়ে গেছেন। আমরা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানের জন্ম নিবন্ধনে আগ্রহী হন না। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে গাফিলতি করেন। অথচ জন্ম নিবন্ধন একটি শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। জন্ম নিবন্ধনের মধ্য দিয়েই একটি শিশুর ভবিষ্যতের অনেক কিছু নির্ভর করে। বিষয়টি জেনেও অনেক অভিভাবক অবহেলা করে থাকেন। তাই বিষয়টি মাথায় রেখে এবং শিশুদের বাবা-মাকে তাদের সন্তানের সঠিক সময়ে সঠিকভাবে জন্ম নিবন্ধনে উৎসাহিত করতে এমন উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, মানুষকে সচেতন, তথ্য নিশ্চিত ও সেবা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশ জনসচেতনতায় কাজ করছে। চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান বলেন, ‘জন্ম নিবন্ধন একজন মানুষের প্রথম রাষ্টীয় স্বীকৃতি। শিশু জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। তাই জন্ম নিবন্ধনে উৎসাহিত করতে ইউনিয়ন ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সচিব, স্মাট উদ্যোক্তা সহ সবাইকে স্বাগত জানাই।