রাজশাহীতে পেনশন কর্মসূচির প্রতি সাধারণ মানুষকে আগ্রহী করে তুলতে প্রথমবারের মতো বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বজনীন পেনশন মেলা অনুষ্ঠিত হয়। গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে হাজি মুহাম্মদ মুহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
উদ্বোধন শেষে তিনি অতিথিদের নিয়ে মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
এরপর কারা প্রশিক্ষণ অডিটরিয়ামে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের আয়োজনে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান ফসিউল্লাহ, এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক সাইদুর রহমান ও জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী।
এই কর্মশালায় সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন ও কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন সুলতানাসহ রাজশাহী বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এনডিপি) সহ বিভাগে কর্মরত বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় সার্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা।
এদিকে অনুষ্ঠানে জানানো হয় এ পেনশন স্কিম নিবন্ধন কর্মসূচিতে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম অবস্থানে রয়েছে রাজশাহী জেলা। www.upension.gov.bd ওয়েবসাইটের পাওয়া সর্বশেষ তথ্য মতে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৬ হাজার ১২৩ জনের নিবন্ধন সম্পন্ন করা হয়।
এছাড়া রাজশাহী বিভাগের আট জেলার মধ্যে বগুড়া জেলায় নিবন্ধন করে ২ হাজার ৯৪ জন, পাবনায় ১ হাজার ৫৫, সিরাজগঞ্জে ৬৭৮, নাটোরে ৬০৮, জয়পুরহাটে ৬১৩, নওগাঁয় ৪২৬ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৪১ জন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ভালো সাড়া মিলছে। বঙ্গবন্ধুর বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনয়নে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতির প্রবর্তন করেছেন। এ উদ্যোগ একটি যুগান্তকারী জনকল্যাণমুখী পদক্ষেপ, যা সব নাগরিকের অবসরকালীন আর্থিক মুক্তির সনদ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এর আগে গত বছরের ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। সেদিন থেকেই ১৮ বছরের বেশি বয়সী বাংলাদেশি নাগরিকরা www.upension.gov.bd ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করছেন। চার শ্রেণির জনগোষ্ঠীর জন্য চার ধরনের পেনশন স্কিম রয়েছে। এগুলো হলো- প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা ও প্রবাসী। এর মধ্যে বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য ‘সুরক্ষা’, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘প্রবাসী’ ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য ‘সমতা’।