কাজীপুর প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে অপহরণের সাড়ে ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও বাক প্রতিবন্ধী দিনমজুর শিপন মিয়ার (৩৫) সন্ধান মেলেনি। এ ঘটনায় অপহরণ মামলার ১ নম্বর আসামি রুবেল মিয়া সম্প্রতি আটকের পর ছাড়া পেয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এতে এলাকার মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অসহায়ত্ব বিরাজ করছে ভুক্তভোগী পরিবারে। প্রশাসনের উদাসিনতাকেই দায়ী করছেন তারা।
অপহৃত প্রতিবন্ধী শিপনের বাড়ি উপজেলার স্থলবাড়ি গ্রামে। প্রতিবন্ধী স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে কৃষি কাজ করে কষ্টে সংসার চালাতেন শিপন। আর অপহরণকারী রুবেল মিয়ার বাড়িও একই গ্রামে। তার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা।
জানা গেছে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রুবেল মিয়াকে কাজ দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান একই এলাকার গাজী খোশলেহাজের ছেলে রুবেল মিয়া। সাথে একই গ্রামের নাইদা’র ছেলে লাবলু (২৫), শুকুরের ছেলে তোজাম (৫২) ও ছালামকেও নিয়ে যান মানিকগঞ্জে ধান কাটার কাজের কথা বলে। কয়েকদিন পর রুবেল ও শিপন ব্যতিত সবাই বাড়ি ফিরে আসেন। পরে রুবেলও ফিরে আসেন কিন্তু শিপন মিয়া আসেন না। শিপনের পরিবারের লোকজন রুবেলের কাছে জানতে চাইলে রুবেল কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
পরে শিপনের পরিবার আইনের আশ্রয় নিতে গত ৮ মার্চ কাজীপুর থানায় যান। ঘটনাস্থল উপজেলার বাইরে অজুহাতে মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরিতে বাড়ি থেকে বাজারে যাওয়ার পথে নিখোঁজ লিপিবদ্ধ করে থানা।
কাজীপুর থানা পুলিশের কোন সহযোগিতা না পেয়ে অপহৃতের ছোট ভাই সজীব মিয়া বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জের আদালতে এপ্রিলের ২ তারিখে চার জনকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা করেন। এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান সিরাজগঞ্জের পিবিআই।
রোববার সকালে মামলার বাদী সজিব মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘পিবিআইয়ের মামলা তদন্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা মানিকগঞ্জে যাওয়ার কথা বলে নগদ ৩০ হাজার টাকা নেন। সুদের ওপর টাকা তুলে দিছি। আসামি রুবেলকে পিবিআই ধরেছিল। পরে আবার তাকে ছেড়ে দিছে। এখন তারা গ্রামেই বীরের বেশে ঘোরে।’
এ ব্যাপারে মামলার প্রধান আসামি রুবেলের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা খোশলেহাজ বলেন, ‘আমি একজন মুক্তি যোদ্ধা তাই আমার ছেলেকে ছাইড়া দিছে পুলিশ। গ্রামের সবাই রাজাকার।’
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক সোহেল রানা বলেন, ‘মামলার তদন্ত চলছে, আসামিকে মানিকগঞ্জ থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’