সিরাজগঞ্জ

বাঁধ ভেঙ্গে বিলের কয়েক শত বিঘা জমির ধান ডুবে গেল কৃষকদের মাঝে হাহাকার

বাঁধ ভেঙ্গে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পৌর সদরের প্রাণনাথপুর,শান্তিপুর ও হাবিবুল্লাহনগর ইউনিয়নের চর নাড়–য়া গ্রামের মাঝে অবস্থিত বাহির চরের বিল এলাকার প্রায় ৫০০ বিঘা জমির পাকা ও আধাপাকা ইরি-বোরো ধান বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে ওই এলাকার কৃষকদের মাঝে ধান হারানোর হাহাকার বিরাজ করছে। গত ৩ দিন ধরে যমুনা,করতোয়া,বড়াল ও হুড়াসাগর নদীতে আবারও পানি বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। এই পানির হাত থেকে ফসল রক্ষায় স্থানীয় কৃষকেরা প্রায় ১ মাস আগে পুকুরপাড়া-শান্তিপুর সড়ক ব্রীজের মুখে মাটির বাঁধ নির্মাণ করে বাহির বিল ও শান্তিপুর শাখা নদীতে পানি প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। বৃহস্পতিবার (১৯ মে) রাতের ঝড়ে ওই বাঁধ ভেঙ্গে শান্তিপুর শাখা নদী ও বাহির বিলে বন্যার পানি ঢুকে এ ফসল ডুবে যায়। সারা বছরের খাওয়ার ধান ডুবে যাওয়ায় এ এলাকার কৃষকদের মধ্যে হাহাকার পড়ে গেছে।

এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আমিরুল ইসলাম, এনামুল হক, চান্নু ফকির, শরিফ ফকির, বাহাজ উদ্দিন, ঠান্ডু শেখ, মনছের আলী, রাশেদ আলী, আতর আলী, সোলেমান শেখ, আবুল ফকির জানান, উজানের ঢলের কারণে এমনিতেই এ নদী গুলোতে বন্যান পানি বৃদ্ধি অব্যহত রয়েছে। এর উপর ঝড়,ভারি বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়ায় ওই বাঁধটি রাতের অন্ধকারে ভেঙ্গে যাওয়ায় তা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ফলে তাদের চোখের সামনে পাকা ও আধাপাকা ধান বন্যার পানিতে ডুবে ব্যাপক ফসলহানী হয়েছে। ধানকাটা কামলার অভাবে তাদের দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আর কোন উপায় ছিলনা। তারা আরও জানান, হাজার টাকা নগদ ও দুবেলা খাওয়া দিয়েও তারা ধানকাটা কামলা জোগার করতে পারেনি। অনেকে কোমর ও বুক পানিতে নেমে সামান্য ধান রক্ষা করতে পারলেও তা দিয়ে অর্ধেক বছরের খাদ্যের যোগানও হবে না বলে তারা জানান। ফলে গ্রাম জুড়ে কৃষকদের মাঝে হাহাকার পড়ে গেছে। এদিকে শনিবার দুপুরে বাহির বিল এলাকা ঘুরে দেখা যায়,এ সব গ্রামের প্রতিটি বাড়ির নারী ও শিশুরা ধানকাটা, নৌকায় ধান পরিবহণ ও মাড়াই কাজে পুরুষদের সহযোগিতা করছে। ফলে ধানকাটা ও মাড়াই নিয়ে এ সব গ্রামের নারী পুরুষ ও শিশুরা ব্যস্ত সময় পাড় করছে।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, উজানের ঢলে যমুনাসহ শাহজাদপুর উপজেলার সব গুলো নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সাখে ঝড়-বৃষ্টির কারণে মাটির কৈরী কাচা বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় বাহির বিলে বন্যার পানি ঢুকে নিচু এলাকার ৪/৫ শত বিঘা জমির ধান ডুবেছে বলে খবর পেয়েছি। সরেজমিন এলাকা পরিদর্শন করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button