সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে জোর করে দরিদ্র কৃষকদের জমির ফসল নষ্ট করার অভিযোগে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারসহ আওয়ামী লীগের ১০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার চর নূরনগর গ্রামের ভুক্তভোগী কৃষক মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে মোকাম কামারখন্দ থানা আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় কবির আনোয়ারসহ ৭০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. নাজমুল ইসলাম জানান, কামারখন্দ থানা আমলি আদালতের বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক রবি মামলাটি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে বাদীসহ স্থানীয় অর্ধশতাধিক কৃষক উদয়কৃষ্ণপুর মৌজার প্রায় ৯৭ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছিলেন। এ অবস্থায় কবির আনোয়ারের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষমতার দাপটে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে ওইসব জমির ফসল নষ্ট করে ফুলজোড় নদীর উত্তোলিত বালু রাখার ষড়যন্ত্র করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করেন ভুক্তভোগী এক কৃষক। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ২০২২ সালের ০১ জানুয়ারিতে ওই জমিতে মাটি ভরাট না করার জন্য আদেশ দেন। কিন্তু তারা উচ্চ আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে ১৪ জানুয়ারি পিস্তল, রিভলভার, রামদা, ধারালো ছুরি, চাইনিজ কুড়াল, হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বেআইনি ভাবে ওই জমিতে ঢুকে চারটি ভেকু মেশিন দিয়ে পাকা সরিষা নষ্ট করে মাঝখানে বালু রাখার জন্য জায়গা রেখে চারদিকে মাটির বাঁধ নির্মাণ করেন। এতে প্রায় ২৩ লাখ ২৮ হাজার টাকার সরিষা নষ্ট হয়ে যায়।
মাটি কেটে কেটে চারিদিকে বাঁধ নির্মাণের ফলে ক্ষতি হয় ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সব মিলে ৭১ লাখ ৭৮ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে অস্ত্র দিয়ে হত্যার ভয় দেখানোসহ এ বিষয়ে মামলা না করার জন্য হুমকিও দেন। এসব কারণে মামলা করতে সাহস পান নাই তারা। মামলার বাদী শহিদুল ইসলাম বলেন, কবির আনোয়ারের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের সরিষার ক্ষেত নষ্ট করে সেখানে ফুলজোড় নদীর বালু রেখে ব্যবসা করার জন্য। পরে আদালতের আদেশের কারণে তারা বালুর রেখে ব্যবসা করতে পারেনি। কিন্তু বালুর রাখার কারণে আমাদের ফসলি জমিগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এতে কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে ওইসব জমিতে কোনো ধরনের আবাদ করতে পারছেন না।