সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জে দুই দিনব্যাপী সাহিত্য মেলার সমাপনী

Eye Hospital Rajshahi

স্টাফ রিপোর্টার : ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে সিরাজগঞ্জে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী সাহিত্যমেলা সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারি সকালে শহরের শহীদ এম মনসুর আলী অডিটোরিয়ামে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোশকতায় ও জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় সাহিত্যমেলা দ্বিতীয় দিনের সমাপনী অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসক কার্য্যালয় ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (উপসচিব) মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুরুতে সিরাজগঞ্জ জেলার জন্ম ও ইতিহাস তুলেধরেন আবৃত্তিকার কবি প্রতিক মাহমুদ।

সাহিত্যমেলার দ্বিতীয় দিনে আলোচনা, সিরাজগঞ্জ জেলার ঐতিহ্য, সাহিত্য ও সংস্কৃতি এবং কবিতা, ছড়া ও পুথি সাহিত্য নিয়ে, অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক শিক্ষক ড. মলয় ভৌমিম।

এসময় তিনি বলেন, সমাজকে অপসংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে দেশের সঠিক সাহিত্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে হবে। সেই লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে দেশের আবহমান সাহিত্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক।

তিনি আরও বলেন, সাহিত্য ও সংস্কৃতির ভিত্তি শক্ত করতে হলে আধুনিক বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে যুগোপযোগী শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। একইসঙ্গে নতুন প্রজন্মকে জাতির সঠিক ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। এই শিক্ষা অন্তরে ধারণ এবং লালন করতে হবে। আর তাদেরকে অবশ্যই মনুষ্যত্ববোধ এবং মৌলিক মানবিক গুণাবলির অধিকারী হতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমাজ ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কথা সাহিত্যিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক খান, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা রুদ্র মোস্তফা।

অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় অংশে প্রবন্ধ পাঠ ও আলোচনা সভার সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটিও শিক্ষা) মো. রায়হান কবীর, এর সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট কবি প্রাবন্ধিক মামুনুর রশিদ, বিশিষ্ট কবি মোহন রায়হান, বিশিষ্ট কবি আলমগীর নিষাদ, বিশিষ্ট ছড়া ও সম্পাদক অদ্বৈত মারুফ প্রমূখ।

বিকেল ৩ টায় সমাপনী দিনে সাহিত্যমেলার লেখক কর্মশালায় জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং জঙ্গিবাদমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে সাহিত্য হতে পারে অন্যতম বড় হাতিয়ার। কারণ, সাহিত্য মানুষকে মননশীল করে তোলে। মানুষের প্রতি মানুষের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করে।

সাহিত্যের দ্রোহ অন্যায়ের প্রতি প্রতিবাদী হতে মানুষের মাঝে সাহস সঞ্চার করে। সমাজ ও দেশকে সুন্দর করতে হলে অবশ্যই সাহিত্যের কাছে আশ্রয় নিতে হবে। কবি-সাহিত্যিকদের সম্মিলন কিংবা মেলার মাধ্যমে জেলা পর্যায়ের সাহিত্যিকদের সৃষ্টিকর্ম জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরার মাধ্যমে দেশের সাহিত্য কর্ম আরও সমৃদ্ধ হবে। সাহিত্য মেলা জেলার কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি করবে। নতুন প্রজন্মের লেখকদের এই আয়োজন যেমন অনুপ্রাণিত করবে, তেমনি সাহিত্য অনুরাগী অনেক মানবিক মানুষ তৈরি হবে।

সন্ধ্যায় জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা প্রশাসকের কার্য্যালয়ের (সিএ) নূরন্নবীখান জুয়েল ও সহকারী কমিশনার জেলা প্রশাসকের কার্য্যালয়ের ইসরাত ফারজানা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button