তাড়াশ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের তাড়াশের আকিকা রহমান রোজ (১৯) নামের এক শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে দুচোখে স্বপ্ন দেখছেন বড় হবার। আর এদিকে মেয়ের পড়াশোনা কীভাবে চলবে- এনিয়ে পরিবারের সকলেই রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১লা জানুয়ারি তাড়াশ পৌর সদরের পশ্চিম পাড়া (মাদ্রাসা পাড়া) আনিছুর রহমান ও রোকেয়া দম্পতির ঘরে তার জন্ম হয়। ৪ ভাই বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। তার বাবা অবসর প্রাপ্ত মাদ্রাসার শিক্ষক এবং মাতা গৃহিনী। তাদের অর্থনৈতিক অবস্থাও তেমন ভালো না। ‘রোজ’ ছোট বেলা থেকেই মেধাবি এবং তার রেজাল্টও অত্যন্ত ভালো।
২০১৩ সালে তাড়াশ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে পিএসসি. পরিক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পেয়েছেন। ২০১৬ সালে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে জেএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে সাধারণ বৃত্তি পেয়েছে।
২০১৯ সালে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে বিজ্ঞান বিভাগ হতে এসএসসি পরিক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে এবং ২০২১ সালে তাড়াশ ডিগ্রী কলেজ হতে মানবিক বিভাগ হতে এইচএসসি পরিক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে।
‘রোজ’ এর সাথে কথা বলে জানা যায়, ছোট বেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। ভর্তির মাধ্যমে তার প্রথম স্বপ্ন পুরন হয়েছে। এখন তার ইচ্ছা ভালোভাবে পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটা চাকরি করা, যার মাধ্যমে পরিবার ও দেশের জন্য অবদান রাখতে চান। তার সফলতার জন্য পরিবারের সকলেরই অবদান অসামান্য। বিশেষ করে বাবা মা ও ছোট ভাই রাফিজ এর অবদান গুরুত্বপুর্ণ। তার সফলতার পেছনে শিক্ষকদের অবদানও কম নয়। এমনকি পড়াশোনার ক্ষেত্রে তার বন্ধু বান্ধব, প্রতিবেশী সবারই সহযোগিতা পেয়েছেন। সম্প্রতি সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ‘খ’ ইউনিটের মেধা তালিকায় ৭২২ তম হয়েছেন এবং শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ে পড়াশোনার জন্য মনোনীত হয়েছেন।
আকিকা রহমান রোজ সম্পর্কে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আলি হাসান (বিএসসি) বলেন, রোজ অত্যন্ত মেধাবী ও ভদ্র। সে নিয়মিত স্কুলে আসতো এবং পড়াশোনায় অত্যান্ত মনোযোগী ছিল। ‘রোজ’ সম্পর্কে তার প্রতিবেশী প্রভাষক আরিফুর রহমান বলেন, ছোট বেলা থেকেই সে বিনয়ী ও মেধাবি। কারও সাথেই কখনই তার দু কথা হয়নি, তান ধ্যান জ্ঞানই ছিল পড়াশোনা। তার সম্পর্কে তার বাবা আনিছুর রহমান ও মাতা রোকেয়া বলেন, আমাদের মেয়ে অত্যান্ত মেধাবি ও খুবই লক্ষ্মী, তাকে কখনই পড়ার কথা বলতে হয়নি।
তার অনেক ইচ্ছাই পুরণ করতে পারি নাই এমনকী তার পড়াশোনার স্বভাবিক পরিবেশও সব সময় দিতে পারিনি। প্রয়োজনীয় প্রাইভেট এর ব্যবস্থাও করতে পারিনি। কিন্তু এ নিয়ে তার কোন অভিযোগ নেই, এ রকম লক্ষ্মী ও মেধাবি মেয়ে পাওয়া সত্যেই ভাগ্যের ব্যপার।