সদরসিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জ সদরের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে শক্তিশালী প্রার্থী আফরিনা মায়া

প্রতিদিন প্রতিবেদক : আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন জেলা যুব মহিলা লীগ এর সাধারণ সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক আফরিনা মায়া। যোগ্যপ্রার্থী হিসেবে ইতিমধ্যেই আলোচনায় উঠে এসেছে মায়া’র নাম। আগামী ৮ মে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচন ঘিরে প্রতীক বরাদ্দের আগেই ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহরের অলিগলি ও ইউনিয়নগুলো। লিফলেট হাতে ভোটারের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।

স্মার্ট ও জনদরদি উপজেলা গঠনের দৃঢ় প্রত্যয়ে-স্লোগান নিয়ে প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন যুব মহিলা লীগ, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আফরিনা মায়া। সদর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে স্বচ্ছ ইমেজ ও ক্যারিসম্যাটিক নেতৃত্ব গুণে এগিয়ে আছেন তিনি। আফরিনা মায়া বলেন, রাষ্ট্রনায়ক, জননেত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প- ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের ব্রত নিয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে তিনি একটি বার্তাই দিচ্ছেন, নির্বাচিত হলে, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলাকে শেখ হাসিনার স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ নির্মাণের ভিশনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করবেন তিনি।

আফরিনা মায়ার জন্ম ১৯৭৯ সালে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় তিনি দর্শন বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে ২০০৪ সালে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন বেলকুচি মডেল ডিগ্রি কলেজে। বর্তমানে একই কলেজে দর্শন বিভাগে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনীতিতে তিনি বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ, সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী পেশাজীবী সংগঠন ‘স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ’-এর সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার কোষাধ্যক্ষ ও ‘বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী’ সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার স্কুল পরিচালনা বিষয়ক সম্পাদক তিনি।

আফরিনা মায়া সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার দত্তবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তার শ্বশুর আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম আব্দুল হালিম ছিলেন ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। প্রয়াত আব্দুল হালিম ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি, প্রবীণ রাজনীতিবিদ মোতাহার হোসেন তালুকদারের ঘনিষ্ঠ সহচর। আব্দুল হালিম স্বাধীনতার পর রাণীগ্রাম ইউনিয়ন কমিটির প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন। এরপর তিনি রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তৎকালীন বৃহত্তর ৩ নম্বর ওয়ার্ড (বর্তমান ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড) থেকে দুই মেয়াদে কমিশনার নির্বাচিত হন এবং এক মেয়াদে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ৭৫ পরবর্তী ক্রান্তিকাল থেকে তিনি ২৫ বছর বৃহত্তর ৩ নম্বর ওয়ার্ড (রাণীগ্রাম, কুশাহাটা, চক কোবদাসপাড়া, কোবদাসপাড়া, দত্তবাড়ী, জানপুর, বাহিরগোলা, ভিক্টোরিয়া স্কুল রোড, মুজিব সড়ক উত্তর, বিএ কলেজ রোড, গয়লা, ঘুড়কা, একডালা) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঐতিহ্যবাহী ‘অগ্রদূত সংসদ’-এর সভাপতি ছিলেন। দত্তবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তিনি। ঐতিহ্যবাহী ‘সিরাজগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরি’র ‘প্রধান লাইব্রেরিয়ান’ ছিলেন আমৃত্যু। আব্দুল হালিম মাস্টার ছিলেন এই অঞ্চলের পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক, মজলুম সমাজসেবক ও শিক্ষাবিদ। ১৯৭৫ পরবর্তী ক্রান্তিকালে তিনি তৎকালীন বৃহত্তর ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সাহসী ও শক্তিশালী নেতৃত্ব প্রদান করেন। যে কারণে আজও তৎকালীন ৩ নম্বর ওয়ার্ড (বর্তমান ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড) সিরাজগঞ্জ শহরে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি এলাকা হিসেবে সুপরিচিত। আফরিনা মায়ার শ্বাশুড়ি তসলিমা বেগম দীর্ঘ ১৬ বছর তৎকালীন বৃহত্তর ৩ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

আফরিনা মায়া পারিবারিকভাবে রাজনৈতিক পরিবেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বেড়ে উঠেছেন। বাবা মরহুম আব্দুল আজিজ কল্যাণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ছিলেন। আফরিনা মায়ার চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক ছাএলীগ নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান সিরাজগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তার ছোট চাচা এস এম আজম ঢাকা উত্তর বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

আফরিনা মায়ার স্বামী আলমগীর নিষাদ পেশায় সাংবাদিক, নেশায় কবি, লেখক ও সাহিত্য সম্পাদক। ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে তিনি সাংবাদিকতায় কাজ করেছেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে। এর আগে কাজ করেছেন নাগরিক টেলিভিশন, ডিবিসি নিউজ, যমুনা টেলিভিশন ও দৈনিক আমাদের সময়ে।

আফরিনা মায়া স্কুল ও কলেজ জীবন থেকে বিভিন্ন সামাজিক, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত রয়েছেন। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়ায়ে কাজ করছেন দীর্ঘদিন। তিনি জাতীয় কন্যা শিশু আডভোকেসি ফোরাম, সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ‘প্রগতিশীল লেখক কেন্দ্র, ‘বাঙগাল’-এর নেতৃত্ব দেন। বর্তমানে তিনি শিল্প-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বিষ্যুদবারের আড্ডা’র আহ্বায়ক। তিনি ‘সিরাজগঞ্জ এসএসসি ৯৪ ব্যাচ’-এর আহ্বায়কের দায়িত্বও পালন করছেন। এছাড়া তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত মাসিক ‘পূর্বাপর’ পত্রিকার সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button