তাড়াশ প্রতিনিধি: চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশের ফসলী মাঠে এ বছর রোপা আমন ও বোনা আমন ধানের ব্যাপক চাষ হয়েছে। এরই মধ্যে ধান পাকতে শুরু করেছে। পাকা ধানে ফসলী মাঠ হলুদ হয়ে উঠেছে। ইতি মধ্যে কিছু কিছু জমিতে ধান কাটা শুরু হলেও পুরোপুরি শুরু হতে আরো কয়েক দিন লাগবে। আর তখন শুরু হবে ধান কাটা ও ধান মাড়াইয়ের মহা উৎসব। অনুকুল আবহাওয়া, রোগ বালাই কম, আর সঠিক মাত্রায় সার প্রয়োগে এ বছর রোপা আমন ও বোনা আমন ধানের আশাতিত ফলন হবে এমনটা জানালেন উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের কৃষক জহিদুল ইসলাম।
পাশাপাশি হাট- বাজারে নতুন ধানের দাম ভাল থাকায় কৃষকেরা খুশি। আবাদের খরচ বাদেও তারা লাভবান হবেন বললেন আরেক কৃষক ছোলায়মান হোসেন।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভার মধ্যে ৪ টি ইউনিয়নে যথাক্রমে তালম, দেশীগ্রাম, মাধাইনগর ও বারুহাঁস ইউনিয়নের ফসলী মাঠে ইরি-বোরো ধান কাটার পর ওই সমস্ত জমিতে ব্রি – ৫৮, ব্রি-৩৪, ব্রি-৩৬, ব্রি- ৯০ ও পাইজাম জাতের ধান কৃষক জমিতে চাষ করে থাকেন। এ ছাড়াও তাড়াশ সদর, মাগুড়া বিনোদ, সগুনা ও নওগাঁ ইউনিয়ন নিচু এলাকা হওয়ায় ওই সমস্ত এলাকার জমিতে বোরো ধান কাটার পর পরই বোনা আমন জাতের ধান চাষ করা হয়। চলতি মৌসুমে ওই ৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকায় ৬ হাজার ৮ শ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ও বোনা আমন জাতের ধান চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়ে ছিল। যা গত বছরের চেয়ে ৫’শ হেক্টর বেশী। তবে লক্ষ্যমাত্রা এ বছর পূরণ হয়েছে।
ইতি মধ্যেই বিস্তৃর্ণ মাঠে বোনা আমন ধান ও ব্রি- ৫৮, ব্রি-৩৪, ব্রি-৩৬, ব্রি- ৯০ ও পাইজাম জাতের রোপা আমন ধান পাকঁতে শুরু করেছে। এ সময় এ জাতীয় ধানে পোকাঁর আক্রমন কম হওয়ায় ভাল ফলন পায় কৃষক। উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের কাস্তা গ্রামের কৃষক আব্দুল আউয়াল, অলি প্রামানিক, হোসেনসহ একাধিক কৃষক জানান, বোরো ধান কাটার পরই জমিতে রোপা আমন জাতের ধান লাগানো হয়। এ সময় বৃষ্টি পাত বেশী হওয়ায় এ জাতের ধান চাষে পানি সেচ ততোটা দিতে হয় না। আর সার ওকীটনাশকও লাগে কম। তিনি আরো জানা, এবছর আবহাওয়া ভাল থাকায় ধানে তেমন পোঁকার আক্রমণ হয়নি। তাই বিগত বছরের চেয়ে এবার ধানের ফলন অনেক ভাল হবে। এ মৌসুমে প্রতি একর জমিতে রোপা আমন ৪৮ থেকে ৫০ মন ধান ফলন হয়ে থাকে। আর বোনা আমন একর প্রতি ২৫ থেকে ৩৫ মন হয়ে থাকে। ক’দিন পরই ধান কাটা পুরোপুরি শুরু হবে। মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের মাগুড়া গ্রামের কৃষক রওশন আলী, তাড়াশ পৌর এলাকার খুটিগাছা গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ইরি ধান কাটার পরই ওই জমিতে দিঘা ভাউলা,মাটিয়াগরল, লাউজাল জাতের আমন ধান বোনা হয়ে থাকে। এ বছর বন্যার পানি কম হওয়ায় আমন ধান ভাল হয়েছে। ফলনও ভাল হবে। তারা আরো বলেন, ধানের বাজার মূল্য উর্ধ্বমুখি হওয়ায় কৃষক লাভবান হবেন। তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তাড়াশ উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে রোপা আমন ও বোনা আমন জাতের ধান চাষ হয়ে থাকে। এ বছর তাড়াশে প্রায় ৬ হাজার ৮’শ হেক্টর জমিতে রোপা ও আমন ধান চাষের লক্ষমাত্রা ছিল। যা গত বছরের চেয়ে ৫’শ হেক্টর বেশী।