গত শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাব সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় সিরাজগঞ্জের অগ্রজ সাংবাদিক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম চৌধুরীর স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল।
সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাব এর উদ্যোগে আয়োজিত এই স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুল কুদ্দুছ।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রেসক্লাব এর সাবেক সভাপতি হেলাল উদ্দিন। প্রয়াত আমিনুল ইসলামের ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফুল ইসলাম জগলু চৌধুরী ও একমাত্র পুত্র সাম্য চৌধুরী।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের নবনির্বাচিত এমপি ড. জান্নাত আরা হেনরী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. কে.এম. হোসেন আলী হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার, অ্যাড. বিমল কুমার দাস, সিরাজগঞ্জের পৌরসভার মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সোরহাব আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম শফি, প্রবীণ নাগরিক রেজাউল করিম সুর্য, প্রেসক্লাব এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক, চ্যানেল আই প্রতিনিধি ফেরদৌস রবিন।
স্মরণ সভায় এমপি হেনরী বলেন, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, সাংবাদিকতা জীবনে সংবাদ তৈরি করেছেন, সাংবাদিক গড়েছেন। পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন সাংবাদিক সংগঠক। সাংবাদিকদের পেশাগত মর্যাদা ও মজুরি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির মহকুমা, জেলা ও কেন্দ্রীয় দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ছিলেন রাজনীতিক, মুক্তিযোদ্ধা ও একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তার মৃত্যুতে আমরা হারিয়েছি আমাদের একজন প্রিয় মানুষকে।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাড. কে. এম. হোসেন আলী হাসান বলেন, তিনি শুধু একজন সাংবাদিকই ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। একজন রাজনৌতিক নেতা। তার মৃত্যুতে আমরা হারিয়েছি আমাদের একজন সহযোদ্ধাকে।
মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা বলেন- তিনি ছিলেন আমার আত্মীয়। সিরাজগঞ্জের একজন খ্যতিমান সাংবাদিক। একজন সুনাগরিক। আমরা তার মৃত্যুতে হয়েছি শোকাহত।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল কুদ্দুছ বলেন তিনি দীর্ঘকাল দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকতার শেষ জীবন পর্যন্ত ছিলেন দৈনিক ইত্তেফাক এর উত্তরাঞ্চলীয় ব্যুরো প্রধান। পাশাপাশি তিনি ছিলেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সমিতি সিরাজগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সময়ে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব করেন। সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রাক্তন সভাপতি, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম চৌধুরী আমৃত্যু সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাব এর আজীবন সদস্য ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমরা হারিয়েছি একজন সাংবাদিক অভিভাবককে। আমরা হয়েছি শোকাহত।
স্মরণ সভায় সিরাজগঞ্জে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক গণকন্ঠের নুরুল ইসলাম বাবু, এটিএন এর ফেরদৌস হাসান, দৈনিক সিরাজগঞ্জ প্রতিদিন এর নির্বাহী সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, প্রেস ক্লাব এর সাবেক সভাপতি হারুনর রশিদ হাসান, দৈনিক প্রতিদিন সংবাদ এর প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদত হোসেন ফিরোজী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম ফিলিফস, মাছরাঙ্গা টিভির প্রতিনিধি উজ্জল, প্রথম আলো প্রতিনিধি আরিফুল গণি, দৈনিক সিরাজগঞ্জ বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক আব্দুল হামিদ খান হীরা, দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার নুরুল ইসলাম রইসী, বাংলাদেশ অবজারভার পত্রিকার অশোক ব্যানার্জী, আমাদের সময়ের আমিনুল ইসলাম, দৈনিক আজকালের জহুরুল ইসলাম, ইত্তেফাক প্রতিনিধি মাহমুদুল কবির, এসএটিভি প্রতিনিধি রহমতুল্লাহ, আরটিভির সঞ্জয়, এখনই টিভির রিফাত রহমান, নজরুল ইসলাম, দেশ টিভি প্রতিনিধি সায়েম উদ্দিন, ভোরের দর্পন পত্রিকার এর এসএম আলামিন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল করিম মুক্তা প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দৈনিক কালের কন্ঠের প্রতিনিধি ইসরাইল হোসেন বাবু।
উল্লেখ্য গত ৪ ফেব্রুয়ারি, রোববার, সকাল ১০টায় সাংবাদিক, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম চৌধুরী সিরাজগঞ্জের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে বয়সজনিত অসুস্থতায় পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যান। তার নামাজে জানাযা রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে সিরাজগঞ্জের রহমতগঞ্জ পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তিনি ০১ মেয়ে ও ১ পুত্র সন্তান, আত্মীয় স্বজন, অসংখ্য গুণগ্রাহী, অনুজ সাংবাদিক, মুক্তিযুদ্ধের সহযোদ্ধা ও রাজনৈতিক সহকর্মী রেখে গেছেন।