তাড়াশ প্রতিনিধি: ট্রান্সফরমার চুরির মহৌৎসব শুরু হয়েছে তাড়াশ উপজেলায়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ইতোমধ্যেই অনেক গুলি ট্রান্সফরমার চুরি হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতের আঁধারে সড়কের পাশে ও মাঠের মধ্যে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে ট্রান্সফরমার চুরি করে খালি বক্স ফেলে রেখে যায় চোরচক্র। এরপর থেকেই বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে তাদের।
তাড়াশের বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী মানিক ভাই বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব এই চোর চক্রটিকে আটক করতে আমরা স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছি।’
তাড়াশ উপজেলার পৌর এলাকার আলহাজ মো. এবাদ আলীর সেচের একটি ৫ কেভিট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। তিনি বলেন, ৭ তারিখ সকালে একজন আমার বাসায় খবর দেন, সেচের ট্রান্সফরমার নেই। পরে খাম্বার কাছে গিয়ে দেখি ওপরে ট্রান্সফরমার নাই। নিচে খালি বাক্স পড়ে আছে।’ যখন বিদ্যুৎ থাকে না, তখনই ট্রান্সফরমারগুলো চুরি হচ্ছে।’
ট্রান্সফরমার চুরির কারণে বর্তমানে ভরা মৌসুমেও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জমিতে সেচ বন্ধ থাকায় আমন আবাদ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
ব্যবসায়ীরাও জানিয়েছেন, ট্রান্সফরমার চুরির পর বিদ্যুৎ না থাকায়, বন্ধ রয়েছে অনেক দোকানপাট, মুরগির খামারসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এতে করে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। বিভিন্ন দপ্তর ঘুরেও সুফল মিলছে না।
ট্রান্সফরমার চুরির পর এভাবেই পড়ে থাকে খালি বাকশোগুলো। ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এদিকে ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক পড়ছে। এসব চোরের বড় সিন্ডিকেট। এদের দ্রুত গ্রেপ্তার করলে আমরা খুশি হতাম।’
উপজেলার সচেতন নাগরিকরা বলছেন, জ্বালানি ও বিদ্যুতের এই সংকটে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রান্সফরমার চুরি করে সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা করছে একটি বিশাল চক্র। এই চক্রকে দ্রুত আইনের আওতায়, না আনলে বড় ক্ষতি হতে পারে।
উপজেলার বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী মানিক মিয়া বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব এই চোরচক্রটিকে আটক করতে আমরা স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছি।’
এসব বিষয়ে তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম বলেন, অতি সম্প্রতি তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে ট্রান্সফরমার চুরি যাচ্ছে। চুরির সঙ্গে সঙ্গে এসব ঘটনা আমরা নিজেদের লোকবল দিয়ে তদন্ত করাই। পরে তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা থানায় এফআইআর করি।’
তিনি জানান, ট্রান্সফরমার চুরি ঠেকাতে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা ছাড়াও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের সচেতন করার কাজ অব্যাহত রয়েছে।
তাড়াশ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক প্রায় ৬৬ হাজার । এর মধ্যে সেচ গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ২২ শত।