জাতীয়শিক্ষাসদরসিরাজগঞ্জ

বীরমুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল হক পাঠাগারের দুজন পাঠক সদস্য দেশসেরাদের অন্যতম

মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ উদ্যোগ

মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর আয়োজিত বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রয়াত আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ উদ্যোগে সিরাজগঞ্জের বীরমুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মাহবুবুল হক পাঠাগারের পাঠক সদস্য প্রতিভা রানী দাশ ও রেজওয়ানা পারভিন দোলা দেশসেরাদের অন্যতম হিসেবে মনোনীত। গত ২৯ জুন ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতায় দেশসেরাদের পুরস্কৃত করা হয। এসময় বীরমুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মাহবুবুল হক পাঠাগারের পাঠক সদস্য রেজওয়ানা পারভিন দোলা ও প্রতিভা রাণী দাশ এর হাতেও পুরস্কার তুলে  দেয়া হয়। পুরস্কার তুলে দেন দেশ বরণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাষ্ট্রিগণ, সাংবাদিক, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সভাপতি, জুরি বোর্ডের সদস্যগন। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মাহবুবুল হক পাঠাগারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক ইসমাইল হোসেন।

গত নভেম্বর মাসে দেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব  আলী যাকের স্মরণে ৩ মাস ব্যাপী এ কর্মসূচি হাতে নেয় মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর। কর্মসূচিতে তিন গ্রুপের স্কুল পর্যায়ে আহসান হাবিব এর লেখা ৭১ এর রোজনামচা, কলেজ পর্যায়ে শেখ তাসলিমা মুন এর আমি একটি বাজপাখীকে হত্যা করতে চেয়েছিলাম এবং বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে কথা সাহিত্যিক মাহমুদুল হাসান এর জীবন আমার বোন- মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গ্রন্থ তিনটির পাঠ পর্যালোচনার জন্য সারাদেশের ৫৫টি গ্রন্থাগারের মাঝে বই তুলে দেওয়া হয়। এরমধ্যে ৪৬টি পাঠাগার থেকে স্কুল পর্যায়ে ২১৬টি, কলেজ পর্যায়ে ১৬৩টি ও বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে ১৫৯টি মোট ৫৪৮ জন নিজ নিজ গ্রন্থপর্যালোচনা মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে জমা দেন।

প্রেরীত গ্রন্থপর্যালোচনা করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর এভারেষ্ট বিজয়ী পর্বতারোহী নিশাত মজুমদার, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুর, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিল্টন কুমার দেব সমন্বয়ে একটি জুরিরোর্ড গঠন করে। জুরি বোর্ড পর্যালোচনার সংখ্যা বেশি হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লেখা মনোনীত করতে ভোরের কাগজ এর স্বর্ণ মনিসহ কয়েকজনকে নিয়ে প্রাথমিক নির্বাচক কমিটি গঠন করে। নির্বাচক কমিটি দাখিলকৃত লেখা থেকে স্কুল পর্যায়ে ৩৭টি, কলেজ পর্যায়ে বীরমুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল হক পাঠাগারের প্রতিভা রানী দাশ ও সাহানা বেগম সুমিসহ ৩১টি ও বিশ^বিদ্যালয় পর্র্যায়ে রেজওয়ানা পারভিন দোলাসহ ২৮টি পর্যালোচনা নির্বাচিত করে। এর মধ্যে জুরিবোর্ড স্কুল পর্যায়ে ১০টি, কলেজ পর্যায়ে ১০টি ও বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে ১০টি মোট ৩০টি লেখা প্রতিযোগিতায় দেশসেরা হিসেবে মনোনীত করে। প্রতিযোগীতায় কোন প্রতিযোগীকেই প্রথম কিংবা দ্বিতীয় এরকম  ঘোষণা না দিয়ে গ্রুপের সেরা দশ হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করেন। এরমধ্যে সিরাজগঞ্জের বীরমুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মাহবুবুল হক পাঠাগারের পাঠক সদস্য প্রতিভা রানী দাশ কলেজ পর্যায়ে ও রেজওয়ানা পারভিন দোলা বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে কৃতিত্বের সঙ্গে নিজ নিজ গ্রুপে সেরা ১০ এ নিজেদের স্থান অর্জন  করে।

গত শনিবার, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর নির্বাচিত গ্রন্থপাঠ লেখকদের আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কৃত করে। প্রতিটি গ্রুপে সেরা ১০ স্থান অর্জনকারীকে ৫ হাজার টাকার বই, নগদ ৫ হাজার টাকা ও সনদ প্রদান করে সম্মানিত করে। এছাড়াও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকেকেই বই ও সনদ পাঠাগার প্রতিনিধি মাধ্যমে প্রদান করা হয়। সিরাজগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মাহবুবুল হক পাঠাগারের ১৩ জন প্রতিযোগীর সনদ ও বই প্রতিযোগীদের পক্ষ থেকে গ্রহণ করে পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাংবাদিক ইসমাইল হোসেন। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাষ্ট্রিগণ- সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর, ড. সারোয়ার আলী, মফিদুল হক, আলী যাকের এর সহধর্মীনি সারা যাকের, পুত্র ইরেশ যাকের,  এভারেষ্ট বিজয়ী পর্বতারোহী নিশাত মজুমদার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সভাপতি শহিদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, প্রাথমিক নির্বাচক কমিটির সদস্য বিশিষ্ট সাংবাদিক ঝর্ণা মনি, কর্মসূচির সমন্বয়ক শাহনেওয়াজ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button