উল্লাপাড়াসিরাজগঞ্জ

স্বামীর পরকীয়া ও যৌতুকের জেরে প্রাণ গেল ১ সন্তানের জননীর

উল্লাপাড়া প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় স্বামীর পরকীয়া সম্পর্ক জানাজানি ও যৌতুকের দাবিতে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় প্রাণ গেল এক সন্তানের জননী মরিয়ম খাতুনের। ঘটনাটি ঘটেছে উল্লাপাড়া উপজেলার দূর্গানগর ইউনিয়নের রুদ্রগাঁতী দিয়ার পাড়া গ্রামে। মামলা ও বাদীর বিবরণ সূত্রে জানা যায় গত ২১ জুন ২০২৪খ্রি. রাতে স্বামী সেনা সদস্য রিয়াজুল ইসলামের যোগসাজশে দেবর রয়েজ উদ্দিনসহ পরিবারের সকলে মিলে হাত-পা বেঁধে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে গলা টিপে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। এবং পর দিন সকালে মেয়ের ভাইকে মুঠোফোনে জানায় তোমার বোন এক্সিডেন্ট করেছে দেখে যাও। এ বিষয়ে মেয়ের পিতা মো. নজরুল ইসলাম ২২ জুন পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে সাথে নিয়ে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে ঘরের মেঝেতে হাত-পা বাধা মেয়ের মরদেহ দেখেন। এবিষয়ে তারা তাৎক্ষনিক উল্লাপাড়া মডেল থানায় অভিযোগ করলে স্বামীর বাড়ি থেকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ মর্গে পাঠায়।

পরবর্তীতে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এ মামলা দায়ের করে।

গত ২৭ জুলাই ইসলামি শরীয়া মতে একই জেলার শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের গাড়াদহ গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের মেয়ের সহিত উল্লাপাড়া উপজেলার দুর্গানগর ইউনিয়নের রুদ্রগাতী দিয়ারপাড়া গ্রামের মোতালেব এর ছেলে মো. রিয়াজুল ইসলামের সঙ্গে মরিয়মের বিবাহ হয়। কিছুদিন পর তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয় তার নাম. রুবাইয়া খাতুন(৩.৫০) বছর । পরবর্তীতে মোঃ রিয়াজুল ইসলাম সেনাবাহিনীতে চাকুরি পায়। চাকুরি পাওয়ার পর অন্য এক মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জরিয়ে পরে। বিষয়টি মরিয়ম জানতে পারায় তার স্বামীর সঙ্গে বাগবিতন্ডা হয়। এবং স্বামীর/পরিবার কর্তৃক তাকে অত্যাচার, নির্যাতন করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে মরিয়মের স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন দফায় দফায় যৌতুকের দাবি করলে মরিয়ম যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় নির্যাতন, অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এদিকে রিয়াজুলের চাকরিজনিত সমস্যার কারণে বিয়ের কাবিন স্থগিত ছিল। এরকম অবস্থায় মরিয়মের অসহায় পিতা. নজরুল ইসলাম পূনরায় গত ২৫ আগষ্ট যৌতুকের দাবীর কিছু টাকা দিয়ে কাবিন রেজিষ্ট্রেশন করে। এ অবস্থায় মরিয়ম সংসার করতে থাকলেও গত ২১ জুন ২০২৪ ইং তারিখের দিবাগত রাতে স্বামী রিয়াজুল ইসলামের যোগসাজশে দেবর রয়েজ উদ্দিনসহ শ্বশুর বাড়ি লোকজন মরিয়মকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে এবং গলা টিপে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়। এবিষয় সেনা সদস্য রিয়াজুল ইসলাম সহ পরিবারের ৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। পরিবারের মানুষ এখন পলাতক রয়েছে।

এ বিষয় উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুর ইসলাম জানান, এ ঘটনার পর মৃত্যু মরিয়মের পিতা. নজরুল ইসলাম থানায় হাজির হয়ে জানালে একটি ইউডি মামলা দায়ের করে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদে সিরাজগঞ্জ মর্গে পাঠিয়েছে। মেয়ের পিতা নজরুল ইসলাম ৬ জনকে আসামি করে কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button