নাহিদ হাসান রবিন (শেরপুর, বগুড়া প্রতিনিধি): সুস্বাদু দইয়ের জন্য বগুড়া জেলার নাম আমরা সবাই জানি। দইয়ের পাশাপাশি আরেকটি খাবার আমাদের দেশের প্রায় এলাকাতেই রয়েছে। সেটা হলো মাঠা। গরু বা মহিষের দুধ থেকে এই মাঠা তৈরি করা হয়। অনেকটা দইয়ের মতো স্বাদের এই খাবারটি দইয়ের মতোই রঙ, তবে দইয়ের মতো জমাট নয়। এটা তরল। এই খাবারটিকে কোন কোন এলাকায় মাঠা, আবার কোন কোন এলাকায় ঘোল বলে থাকে। এই মাঠা বা ঘোল বহু কাল আগে থেকেই বগুড়ায় তৈরি হয়। এক সময় মাটির হাঁড়ি বা শিসার পাতিলে করে ঘোষ সম্প্রদায়ের লোকেরা ফেরি করে বিক্রি করত। যুগের পরিবর্তনে গত এক যুগ হলো এই মাঠা বা ঘোল বগুড়া শেরপুরের ফুড ভিলেজ, সাউদিয়া, শম্পা, শম্বা, শাম্পা, বৈকালী, জলযোগ সহ বিভিন্ন দধি ভাণ্ডারে বোতলজাতকরণে পাওয়া যায়। গরমকালে শরীরটাকে একটু শীতলের পরশ দিতে এই মাঠার যেন জুড়ি নেই। রমজান মাসে এর চাহিদা বেড়ে তিন গুণ হয়ে যায়। এগুলোর দাম ১শ থেকে ১শ ৪০ টাকা লিটার। তবে রোহানের মাঠা বিক্রি হয় প্রতি গ্লাস ২০ টাকা এবং লিটার ১শ টাকা। ধীরে ধীরে এই মাঠা এলাকা ও বাইরে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সম্প্রতি এক বছর হলো উপজেলার ছাতিয়ানি গ্রামের রিপন খান এই মাঠাকে আরো উন্নত করে ‘রোহান মাঠা’ নামে বাজারজাত করছে। এই মাঠা এলাকার অন্যান্য মাঠার মতো হালকা দধি রঙ না, এটা ধবধবে সাদা রঙের। রোহান মাঠার স্বত্বাধিকারী রিপন খান জানান, প্রতিদিন ৯শ থেকে ১ হাজার লিটার মাঠা তৈরি হয়। যা সিলিন্ডার আকৃতির ১০টি বিশেষ গাড়িতে করে এলাকাসহ পাশ্ববর্তী জেলা নাটোরের সিংড়া, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর ও রায়গঞ্জ উপজেলায় বিক্রি করা হয়। শম্বা দধি এ্যান্ড মিষ্টান্ন ভাণ্ডার এর স্বত্বাধিকারী ইয়াছিন আলী বলেন, তাদের শোরুমে প্রতিদিন ৮০ থেকে ১শ লিটার মাঠা বিক্রি হয়। শহরের অন্যান্য দোকানীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শেরপুরে প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে তিন হাজার লিটার মাঠা বিক্রি হয়। এভাবে দিন দিন মাঠার চাহিদা বেড়েই চলছে। এলাকার অনেক মাঠা ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে প্রচণ্ড গরমে একটু শান্তির ছোঁয়া পেতে এই মাঠার কোন তুলনা হয় না। সচেতন মহলের ধারণা একদিন সারা দেশে এই মাঠা জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
মন্তব্য করুন