রায়গঞ্জ প্রতিনিধি : আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে গড়ে ওঠা সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত উন্মুক্ত লাইব্রেরি ‘ নৈঃশব্দ্য মহাকাল’ গণগ্রন্থাগারটি সরকারি অনুমোদন পেয়েছে।
মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর সিরাজগঞ্জ জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান মাছুমা নাজনীন গণগ্রন্থাগার অধিদফতরের তালিকাভুক্তিকরণ সনদ প্রদান করেন।
সনদ গ্রহণ করেন উন্মুক্ত লাইব্রেরি ‘নৈঃশব্দ্য মহাকাল’ এর প্রতিষ্ঠাতা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান ।
এর আগে সরেজমিনে এই উন্মুক্ত লাইব্রেরিটি পরিদর্শন করেন জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান। এ সময় তিনি পাঠাগারের অবকাঠামো, রেজিস্ট্রার সহ যাবতীয় ডকুমেন্টস যাচাই-বাছাই করেন। পরে কাগজপত্রের সঠিক থাকায় তিনি সরকারের পক্ষে এ নিবন্ধন প্রদান করেন।
বই পড়া প্রতিটা মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। বই পড়ার অভ্যাসের মাধ্যমে অনেক কিছু জানা বা শেখা সম্ভব। বই পড়ার মাধ্যমে যেমন নিজেকে সমৃদ্ধ করা যায় ঠিক তেমনি অনেক কিছু উপভোগ করা যায়। ভালো সময় কাটে মনটা হালকা হয়ে যায়। অস্থিরতা কেটে যায়। সে লক্ষেই সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা বাসিকে বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করতে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান’র উদ্যোগে এ লাইব্রেরি নির্মাণ করা হয়েছে।
গত ২৯ এপ্রিল ২০২৪ থেকে লাইব্রেরিটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে স্থাপিত এই লাইব্রেরী এরই মধ্যে বই প্রেমীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ছোট-বড় সব বয়সী পাঠক আসছে এই লাইব্রেরীতে। বই প্রেমারা নিজেদের পছন্দের বই পড়ছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাঠাগার থাকলেও উপজেলা পরিষদের ভেতরে একটি ব্যাতিক্রম এবং উন্মুক্ত পাঠাগার এটিই প্রথম। উন্মুক্ত লাইব্রেরি নৈঃশব্দ্য মহাকালে রয়েছে চার তাকওয়ালা বুকশেলফ, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন লেখকের গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ইতিহাস, সংস্কৃতি, শিশুতোষ এবং ধর্মীয়সহ প্রায় চার শতাধিক বই। অসাধারণ নির্মাণশৈলীর উন্মুক্ত এ গ্রন্থাগার দেখে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা ও পাঠক প্রেমারা।
সরকারি বেগম নুরুণনাহার তর্কবাগীশ অনার্স কলেজের প্রভাষক এম আব্দুল্লাহ সরকার বলেন, নৈঃশব্দ্য মহাকাল পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান স্বপ্ন দেখেন একটি আলোকিত সমাজের। যেখানে থাকবে না কোনো নিরক্ষর মানুষ, থাকবে না কোনো অন্ধকার। সরকারি এই কর্মকর্তার আকাশসম স্বপ্ন। পাঠাগার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই এবং তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নে নানা পরামর্শও প্রদান করেন তিনি। উন্মুক্ত লাইব্রেরিটির প্রতিষ্ঠাতা ইউএও মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, উন্নত দেশগুলোতে আমরা রাস্তার পাশে কিংবা উন্মুক্ত পার্কে মানুষকে বই পড়তে দেখি। কিন্তু আমাদের দেশে সেটি দেখা যায় না। উন্মুক্ত লাইব্রেরির মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশেও সে ধরনের সংস্কৃতি তৈরির চেষ্টা করছি। তিনি আরও বলেন, তরুণদের মধ্যে যারা বই বিমুখ হয়ে গেছে, উন্মুক্ত লাইব্রেরি তাদের জন্য নতুন দ্বার খুলে দেবে, নতুন পথ দেখাবে এবং নতুন করে ভাবতে শেখাবে। একইসঙ্গে উন্মুক্ত লাইব্রেরি ‘ নৈঃশব্দ্য মহাকাল’ আমাদের মগজের অন্ধত্বতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি, অপসংস্কৃতির মনোভাব দূর করতে ভূমিকা রাখবে। এই লাইব্রেরিটির রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য উপজেলার সচেতন মহলকে তিনি আহবান জানান।