এনডিপি সমন্বিত কৃষি ইউনিটের আওতায় সফল খামারী উদ্যোক্তা সম্মাননা প্রদান ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় গত ২৫ জুন, মঙ্গলবার সকালে কামারখন্দ উপজেলার ধামকোল বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে কৃষি, মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ খাতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করায় কৃষি খাত থেকে ৩ জন, প্রাণিসম্পদ খাত থেকে ২ জন এবং মৎস্য খাত থেকে ১ জন সহ মোট ৬ জনকে উদ্যোক্তা সম্মাননা ২০২৪ প্রদান করা হয়। প্রত্যেককে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং নগদ অর্থ দেয়া হয়।
এনডিপির ঋণ সহয়তা কর্মসূচির পরিচালক মোসলেম উদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিরাজগঞ্জ খামারবাড়ি এর উপপরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, কামারখন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন বর্মন, কামারখন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনিরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, যেসকল কৃষক কৃষি ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখেন তাদেরকে সরকারিভাবে এআইপি মর্যাদা দেয়া হয়। এনডিপি উদ্যোক্তা সম্মাননা প্রদান ২০২৪ অবশ্যই কৃষকদের মাঝে পজিটিভ ধারণা তৈরি করবে। অনেক বড় পরিসরে আয়োজন দেখে আমি খুবই আনন্দিত। কৃষি, মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ দেশের উন্নয়নে একটি বড় অংশীদার। আর সেই অংশীদারে বেসরকারি সংস্থা পিছিয়ে নেই। সমন্বিতভাবে আমাদেরকে কৃষি ক্ষেত্রে আরও বিল্পব ঘটাতে হবে। আজকের সম্মননা আয়োজনে সবাই উদ্বুদ্ধ হয়ে কৃষির আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার আরও সম্প্রসারণ করতে হবে। এই অর্থবছরে যেসকল কৃষক সম্মাননা পাননি তাদের চেষ্টা থাকবে এনডিপি থেকে আগামী অর্থবছরে ভাল কাজের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করা এবং নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত এআইপি হিসেবে গড়ে তোলা। সামগ্রিকভাবে সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কার্যক্রম প্রশংসনীয়। ভবিষ্যতে এই কার্যক্রম আরও বেগবান হবে বলে আমি প্রত্যাশা করি। পরিশেষে এনডিপি’কে ধন্যবাদ জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে মোসলেম উদ্দিন আহমেদ বলেন, এনডিপি বর্তমানে ৪৪ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এনডিপি ১৯৯২ থেকে সাল থেকে মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। সংস্থা ক্রেডিট সাপোর্ট প্রোগ্রামের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
এছাড়াও সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কর্ম এলাকায় এনডিপ’র প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তার গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরেন তিনি। সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন একটি আধুনিক প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের পর উক্ত প্রযুক্তির সফলতা দেখে নিকটবর্তী কৃষক সেই কার্যক্রম করতে আগ্রহ সহকারে তা বাস্তবায়ন করবে তাহলে এই ইউনিটের সফলতা আসবে। আগামী দিনগুলোতে কৃষি আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হবে সেজন্য ফসলের নতুন জাত ব্যবহার করতে হবে বলে উল্লেখ করেন। চলতি বছরে যেকল উদ্যোক্তা সফলতার সহিত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছেন তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি। অন্যরা তাদের সফলতা দেখে আরও উদ্বুদ্ভ হয়ে কাজ করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে সেটা আমাদের প্রত্যাশা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তার বক্তব্যে বলেন সরকারি বেসরকারি প্রয়াসে দেশে গবাদি প্রাণির লালন পালন এবং ব্যবস্থাপনা অনেক উন্নত হওয়ার কারনে প্রাণিসম্পদ খাত অভাবনীয় উন্নতি সাধন করেছে। আজকের সফল উদ্যোক্তা সম্মাননায় উপস্থিত থাকতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। আশা করি উদ্যোক্তা সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে অন্যান্য খামারীরা পূর্ণদ্যোমে কাজ করে সফলতা লাভ করবে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বলেন এনডিপি’র আজকের উদ্যোক্তা সম্মাননা প্রদান ভবিষ্যতে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রমে একটি পজিটিভ ইমপ্যাক্ট আসবে। সমন্বিত কৃষি ইউনিটের বিভিন্ন প্রদর্শনীর কার্যক্রমে আরও গতি সঞ্চার করবে বলে আমি মনে করি। সুন্দর একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য এনডিপি’কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান মৎস্য কর্মকর্তা।
কামারখন্দ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা তার বক্তব্যে বলেন, মাঠে সরকারি দপ্তর এবং বেসরকারি সংস্থা যৌথভাবে কাজ করছে বলে দেশে কৃষির বিভিন্ন প্রযুক্তি সফলতার সাথে বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে। যার কারনে কৃষি সেক্টর দেশের উন্নয়নে অগ্রনী ভূমিকা পালনে সক্ষম হচ্ছে। আজকের উদ্যোক্তা সম্মাননা অন্যদের প্রেরণা জোগাবে। বেসরকারি কৃষি,মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ খাতে এইভাবে সম্মাননা প্রদান করা হয় এটা আমার জানা ছিলনা বলে উল্লেখ করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। উল্লেখ্য, সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কার্যক্রম এনডিপি ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে বাস্তবায়ন করে আসছে। পরিবেশবান্ধব লাগসই প্রযুক্তি বিস্তারের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, বেকারত্ব হৃাস করা এবং পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করা উক্ত ইউনিটের মূল উদ্দেশ্য।