সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ভ্যানচালক আশরাফুল ইসলাম হত্যায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আসামি আব্দুল মান্নানকে (৪০) যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৩৭৯ ধারায় তিন বছর, ২০১ ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৪ হাজার টাকা জরিমানা পাশাপাশি তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এই দন্ডাদেশ দেন। দন্ডপ্রাপ্ত আব্দুল মান্নান সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বন্যাকান্দি গ্রামের আছির উদ্দিনের ছেলে। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুর রহমান ও স্টেনোগ্রাফার রাশেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আসামি আব্দুল মান্নান পলাতক রয়েছেন।
মামলায় জানা গেছে, ২০০৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর উপজেলার বন্যাকান্দি গ্রামের খলিলুর রহমানের ভাগিনা আশরাফুল ইসলাম বাজারে ভ্যান রেখে সিডির দোকানে যায়। এ সময় একই গ্রামের ভেলু ওরফে জুয়েল ভ্যানটি চুরি করে সলপ বাজারে নিয়ে যায়। পরে ভ্যানচালক খবর পেয়ে সলপ বাজারে গিয়ে লোকজনকে ঘটনার বিষয়টি জানিয়ে বিচার চাইলে এ বিষয় নিয়ে ভ্যান চালক আশরাফুলের সঙ্গে ভেলু ওরফে জুয়েলের কথা কাটাকাটি হয়। পরে বিষয়টির মীমাংসাও হয়।
ওই দিন রাতেই ভেলু ওরফে জুয়েল তার সহযোগী, আব্দুল মান্নান ও সাইফুল ইসলাম তিনজন মিলে আশরাফুল ইসলামের ভ্যান ভাড়া নিয়ে উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামের কামারখন্দ-বেলকুচি আঞ্চলিক সড়কের পাশে মাঠে নিয়ে আশরাফুল ইসলামকে মারধরের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে লাশ গুম করার জন্য পানিতে ডুবিয়ে রেখে ভ্যান নিয়ে চলে যান তারা।
এ ঘটনায় নিহত আশরাফুল ইসলামের মামা খলিলুর রহমান বাদী হয়ে কামারখন্দ থানায় হত্যা মামলা করেন। আদালতে ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ আদালত এ রায় দেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের (পিপি) আব্দুর রহমান ও স্টেনোগ্রাফার রাশেদুল ইসলাম আরও বলেন, মামলার আসামি সাইফুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করেছেন। আসামি ভেলু ওরফে জুয়েল শিশু হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে শিশু আদালতে মামলা চলমান। আর আব্দুল মান্নানকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।