সিরাজগঞ্জ শহরের হোসেনপুর উত্তরপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা জরিনা বেগম। ৮ সদস্যের পরিবার। স্বামীর একার আয় দিয়ে পরিবার চালানো খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাদের দুটি সন্তানকে প্রকৃত মানুষ করার লক্ষ্যে লেখাপড়ার কার্যক্রম চলমান। সব মিলিয়ে জরিনা খাতুনের টানাটানির সংসার। এই অবস্থায় এগিয়ে আসে সিরাজগঞ্জের একমাত্র পরিবেশবাদী সংগঠন ক্লিন সিরাজগঞ্জ গ্রীন সিরাজগঞ্জ। জরিনা খাতুনকে দক্ষ এবং স্বাবলম্বী করতে তার হাতে তুলে দেন ১টি সেলাই মেশিন।
গত ১ মে সংগঠনের নিয়ম মেনে জরিনা খাতুন সিরাজগঞ্জ মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী সৈয়দা আয়েশা মঞ্জুরের মাধ্যমে “ক্লিন সিরাজগঞ্জ গ্রীন সিরাজগঞ্জ” বরাবর ১টি সেলাই মেশিনের জন্য আবেদন করেন। গতকাল সোমবার তার আবেদনের প্রেক্ষিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে সেলাই মেশিনটি তার হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেলাই মেশিন হস্তান্তর কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সম্মানিত সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবু বিমল কুমার দাস।
সংগঠনের কার্যক্রম দেখে রাজনীতিক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. বিমর কুমার দাস বলেন – ‘যে বয়সে ছেলেরা ভুল পথে পা বাড়ায়, সেই বয়সে তোমরা দেশের কথা মাথায় নিয়ে উন্নতি সাধনে উন্নত সমাজ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছ। তোমাদের সকল কার্যক্রম দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি, এবং আমি বিশ্বাস করি তোমাদের এই কার্যক্রম যদি অব্যাহত থাকে তবে অবশ্যই তোমরা যে উদ্দেশ্য নিয়ে আগাচ্ছো সেটি সফল হবেই। আজ থেকে আমি তোমাদের পাশে থেকে তোমাদের সকল বিষয়ে সহযোগিতা করার চেষ্টা করব।’
এসময় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আশিক আহমেদ বলেন – ‘আমরা সব সময় ইতিবাচক নতুনত্ব পরিবর্তনে বিশ্বাসী। একজনকে এক বেলা খাবার দেয়া বা সাত দিনের বাজার করে দেয়ার চেয়ে আমার বিশ্বাস করি একজন মানুষকে স্থায়ীভাবে স্বাবলম্বী করে দেওয়াটা অনেক উত্তম। পূর্বে আমরা বিভিন্ন জনকে সেলাই মেশিন, রিক্সা, ভ্যান, বাড়ি, দোকান করে দিয়েছি। পাশাপাশি যুব সমাজকে দক্ষ সম্পদের রূপান্তরিত করার জন্য বিভিন্ন রকম আইটি এবং কর্মমুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি আমরা। আমরা পরিবেশের জন্য যতটা কাজ করি, চেষ্টা করি সমাজের জন্য সমহারে সামাজিক এবং মানবিক কাজ করার। আমরা সিরাজগঞ্জবাসীর কাছে দোয়া চাই।’
উল্লেখ্য আগামী সপ্তাহে আরো একজনকে সেলাই মেশিন প্রদান করবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য. দক্ষ মানবসম্পদ করার লক্ষ্যে, সিরাজগঞ্জের জনপ্রিয় পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন স্বাবলম্বী’র গল্প নামক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই প্রকল্প থেকে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষকে অগ্রসর করতে এবং দক্ষ জনসম্পদের রূপান্তর করতে নানা কর্মমুখী সহায়তা প্রদান করা হয়। এই প্রকল্প থেকে এখন পর্যন্ত ১২ জনকে সেলাই মেশিন, ৩ জনকে গৃহনির্মাণ, ৩ জনকে দোকান নির্মাণ, ১ জনকে রিক্সা প্রদান এবং অর্ধ শতাধিক যুবককে আইটি ফ্রিল্যান্সিং ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে।